রাজনীতি ২০ মার্চ, ২০২৩ ১২:৫৭

‘মাঠ’ নাকি ‘ইফতার’ রোজায় কোন রাজনীতিতে সরব থাকবে বিএনপি?

আমাদের কাগজ রিপোর্ট: পবিত্র রমজান মাসে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেও জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে বিএনপি। এখন রমজান মাসজুড়ে বিএনপির মূল ফোকাস থাকবে ‘ইফতার রাজনীতিতে’। অন্য বছরের মতো এ বছরও আলেম-ওলামা, রাজনীতিবিদ, পেশাজীবী, বিদেশি কূটনীতিকসহ যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া সমমনা জোট ও দলগুলোর সাথে ইফতার-মাহফিল করবে দলটি। এর মাধ্যমে নেতাকর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সাথে সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করবে বিএনপি।

সূত্র জানায়, রমজানে চলমান আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় দলটির হাইকমান্ড। এরপর গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দলীয় সমর্থক সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ১০টি ধাপে সারাদেশে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) দলীয় সমর্থক বর্তমান ও সাবেক ১৮৩৭ জন চেয়ারম্যানদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বিএনপি। এরমধ্যে ২৩৮ জন বক্তব্য রাখেন। প্রতিটি বৈঠকেই জনপ্রতিনিধিদের মতামত শোনেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও শীর্ষ নেতারা। রমজানের মধ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের মতামত জানতে চাইলে জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা করে মাঠের কর্মসূচিতে না যাওয়ার পরামর্শ দেন তারা। জনপ্রতিনিধিদের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে রমজান মাসে চলমান কর্মসূচি থেকে ফিরে আসে বিএনপি।

তবে রমজানে আন্দোলন কর্মসূচি থেকে ফিরে এলেও মাঠে থাকবে বিএনপি। সর্বশেষ গত ১৮ মার্চ যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করে বিএনপি এবং সমমনা জোট ও দলগুলো। রমজানের আগে এটি ছিল যুগপৎ আন্দোলনের শেষ কর্মসূচি।

রমজানে আন্দোলনের ধরন সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান  বলেন, আমাদের আন্দোলন চলছে, কখন কি হবে সেটা আপনারা জানতে পারবেন। সেটা এখন কিছু বলা সম্ভব নয়। আন্দোলন চলছে, দেখা যাক কখন কি হয়। একেক সময় আন্দোলন একেক ধরনের হয়। আন্দোলন রমজানেও চলবে, বন্ধ হবে না। আন্দোলন নিয়ে প্রতি সপ্তাহে আমাদের আলোচনা হয়, সেখানে সিদ্ধান্ত হয়।

জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাস রমজান। রমজান মাসে রোজার মধ্যদিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের কর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দলগুলো এগুলোই করে আসছে। এবারও হয়তো সেটাই থাকবে। তবে যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অর্থনৈতিক সঙ্কট, রাজনৈতিক সঙ্কট বেশি। এই সঙ্কটে রোজার মধ্যেও সরকার স্বাভাবিক থাকবে- এটা আমার কাছে মনে হয় না। কারণ যত দিন অতিক্রম করছে নির্বাচন সামনে চলে আসছে। এমন নয় যে নির্বাচন রোজার জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। এই নির্বাচনে বিএনপিসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজনৈতিক দল নির্দলীয় সরকারের অধীনে করতে চায়। এ বিষয়টি যদি মীমাংসা না হয়, তাহলে আমার ধারণা রোজা নিরিবিলিতে চলবে- এমন নাও হতে পারে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, কর্মসূচি অবশ্যই আসবে, সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমাদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে এবং রমজান মাসে অবশ্যই কর্মসূচি থাকবে। পরিবেশ-পরিস্থিতির উপর নির্ধারণ করবে কর্মসূচি কোন ধরনের হবে। আওয়ামী লীগ এখন দমন-পীড়নে ব্যস্ত। তারা কি পরিমাণ স্বৈরাচারী হয়ে উঠছে, রাজনৈতিক পরিবেশ সার্বিক বিবেচনায় দলের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে স্থায়ী কমিটি সিদ্ধান্তের অনুযায়ী কর্মসূচি হবে। সূত্র: ঢাকা মেইল 

 

 

আমাদের কাগজ/টিআর