সারাদেশ ২৮ মার্চ, ২০২৩ ০১:৫৬

শ্রেণিকক্ষে ডেকে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার ৪ 

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আমাদের কাগজ ডেস্কঃ শ্রেণিকক্ষে আটকে বাবা ও ছেলেকে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত ফরিদপুরের মধুখালীতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। সোমবার দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। 

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের মাঝকান্দি গ্রামের ফরমান মোল্যা (২১), একই গ্রামের সজিব মোল্যা (২২), সদরের শিবরামপুর গ্রামের জুবায়ের শেখ (২০) ও হাসিব ভুইয়া (২০)।

এ সময় পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, তাদের নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এর আগে ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। যদিও তাদের মধ্যে দুজন জামিনে বেরিয়ে এসেছেন। তবে মামলার প্রধান আসামি কুতুবউদ্দিন এখনো জেলে রয়েছেন। 
 
পুলিশ সুপার বলেন, যে মেয়েটির কথা এখানে বলা হয়েছে সে ইয়ামিন মৃধার প্রথম স্ত্রীর মেয়ে। মেয়েটি হওয়ার পরই তার মা মারা যান। দুই মাস আগে মেয়েটিকে স্থানীয় আড়য়াকান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেয় তার সৎ ভাই রাজন(১৫)। 

তবে মেয়েটিকে বাড়ি নিয়ে যেতে চায় ওই স্কুলেরই একজন নি:সন্তান শিক্ষক লিপি। মেয়েটিকে তিনি দু’বার তার ফরিদপুরের বাড়িতেও নিয়ে যান। 

শেষবার তিনি কাউকে না জানিয়ে মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে আসার পর গত ১৭মার্চ তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই তার বাবাকে স্কুলে ডেকে নেয়া হয়েছিলো। এরপর তার ভাইকেও ডেকে নেয়া হয়। তারপর তাদের ওপরে নির্মম নির্যাতন করা হয়।

পুলিশ জানায়, বাবা ও ছেলেকে নির্যাতনের আগে মেয়েটির একটি ভিডিও করা হয় যেখানে সে তার বাবা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করে। আর ভাইরাল হওয়া নির্যাতনের ভিডিওটিও আমরা প্রথমে পাইনি। এজন্য প্রথমেই যৌন নির্যাতনের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারিনি। তবে ঘটনার পরেরদিন তার বাবা ও ছেলেকে ডেকে এনে কথা বলে আমরা বুঝতে পারি যে, বাবা এ অভিযোগ থেকে মুক্ত। পরে মেয়েটিকে যখন মেডিকেল টেস্ট করার জন্য পাঠিয়েছি তখন সে সত্য কথা বলেছে।

সে আদালতে জবানবন্দিতে বলেছে, ‘আমাকে যৌন নির্যাতন করা হয় নাই। আমি মেডিকেল টেস্ট করাতে চাই না। ওই মহিলা (রুমা) আমাকে প্রলোভন দেখিয়েছে। টাকা দিয়ে বলেছে, যে তোর ভাই আর বাবার বিরুদ্ধে এসব কথা বলবি। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, মেয়েটি আমাদের কাছে এসব কথা বলে নাই বরং কোর্টে বলেছে। এজন্য তার আগেই রাজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে এখন বুঝতে পারছি রাজন মৃধা নির্দোষ। আমরা এ মামলায় ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দিবো এবং রাজন সংশোধনাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ মার্চ মধুখালীর জাহাপুর ইউনিয়নের আড়ুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণিকক্ষে ইয়ামিন মৃধা (৪০) ও তার ছেলে রাজন মৃধা (১৫) কে নির্মম নির্যাতন করা হয়। এরপর নির্যাতনের ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় উঠে। মিথ্যে রটাতে ওই মহিলাকে ঠিক করেছেন ওই স্কুল শিক্ষিকা।

আমাদের কাগজ/এমটি