ধর্ম ডেস্ক: রমজানের রোজা ইসলামের অন্যতম রোকন এবং ফরজ ইবাদত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর; যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বনকারী হতে পারো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
রমজানের রোজার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্য, কিন্তু রোজা এর ব্যতিক্রম। রোজা শুধু আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব।’ (মুসলিম: ২৭৬০)
‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে রমজানের একটি রোজা ভঙ্গ করবে, সে আজীবন সেই রোজার (ক্ষতিপূরণ) আদায় করতে পারবে না।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ৯৮৭৮)
রোজাদারকে অনন্য মর্যাদা দিয়েছে ইসলাম। রমজানের বিধান যথাযথ আদায়ের কারণে রোজাদারের অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি রমজানে ঈমানের সাথে ও সওয়াবলাভের আশায় রমজানের রোজা পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াবলাভের আশায় লাইলাতুল কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত (নামাজ) আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হয়।’ (সহিহ বুখারি: ১৮৮৭)
এছাড়াও হাদিসে এসেছে, রোজাদারদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়, তাদের দোয়া কবুল করা হয়। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, 'অবশ্যই আল্লাহ তাআলা রমজান মাসের প্রতিদিন ও রাতে অসংখ্য ব্যক্তিকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন এবং প্রত্যেক মুমিন বান্দার একটি করে দোয়া কবুল করেন।’ (মুসনাদে আহমদ: ৭৪৫০; মুসনাদে বাজ্জার: ৯৬২)
আরও পড়ুন: রমজানে যেসব গুনাহ ভুলেও করবেন না
অন্য হাদিসে আছে, ‘ইফতারের মুহূর্তে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়াটি রমজানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে‘ (আহমদ: ৫/২৫৬)
‘সিয়াম ঢাল স্বরূপ। এ দ্বারা বান্দা নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে পারো’ (আহমদ: ১৫২৯৯)। অন্য হাদিসে এসেছে,‘সিয়াম ঢালস্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার এক মজবুত দুর্গ।’ (আহমদ : ৯২২৫)
‘রোজাদারের মুখের ঘ্রাণ আল্লাহর কাছে মিশকের চেয়েও সুগন্ধিময়...’ (বুখারি: ১৯০৪, মুসলিম: ২৭৬২)। আবু উমামা (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন, যার কারণে আমি জান্নাতে যেতে পারি। তিনি বললেন, ‘তুমি সিয়াম পালন করো। কেননা এর চেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন কোনো ইবাদত নেই।’ (নাসায়ি: ২২২১)
শয়তানের হয়রানি থেকেও মুক্ত থাকেন একজন রোজাদার। কারণ, রোজা শুরু হওয়ার সময় শয়তানকে শেকলবন্দি করা হয়। একইসঙ্গে জাহান্নামের দরজা বন্ধ করা হয় এবং খুলে দেওয়া হয় জান্নাতের সকল দরজা।
এভাবে বহু নেকি, নেয়ামত ও ফজিলত অর্জন করেন একজন রোজাদার আর অভিষিক্ত হন অনন্য মর্যাদায়। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে এ মর্যাদার অংশীদার করুন। আমিন।
আমাদেরকাগজ/এইচএম