দুর্যোগ ১৪ মে, ২০২৩ ০১:৫২

সেন্টমার্টিনে মোখার তাণ্ডব

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আমাদের কাগজ ডেস্ক: পশ্চিমের নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত দেশের একমাত্র কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে রোববার দুপুর ১টার পর মোখা'র তাণ্ডব শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করছে এই ঘূর্ণিঝড়টি।  সবশেষ আবহাওয়াবিদরা জানান, সেন্টমার্টিন ও মিয়ানমার উপকূলে মোখায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্তের আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে ।

জানা যায়, সেন্টমার্টিনের ঘাট এলাকায় বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে রয়েছে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। আতঙ্কের মধ্যে সময় কাটাচ্ছে সেন্টমার্টিনের সাধারণ মানুষ।  স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা কয়েক ফুট বেড়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‌সময়ের সাথে সাথে বাতাসের তীব্রতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন জোয়ারের সময়। যদি বাতাসের সাথে যদি জোয়ার আসে তাহলে সাগরের পানি কূলের মধ্য চলে আসবে।এই মুহূর্তে মানুষ খুবই আতঙ্কিত। তাদেরকে সান্ত্বনা দেওয়া হচ্ছে। 

সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা মনির হোদেন বলেন, পুরো সেন্টমার্টিনকে তছনছ করে দিচ্ছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। অতুলনীয় তীব্র বাতাস। ভেজা বালি পর্যন্ত উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জোয়ার আসার সময়ও ঘনিয়ে আসছে! আল্লাহ তোমার কাছে বিনীত প্রার্থনা এখন জোয়ার দিও না।জোয়ারের পানি আসলে সেন্টমার্টিনের জন্য বড়ই হুমকি। আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন।

ঘূর্ণিঝড় মোখা মূল আঘাত হানবে মিয়ানমারের ওপর। যে কারণে বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই ঝুঁকি কেটে গেছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা টেকনাফ থেকে ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরত্বে দক্ষিণ মিয়ানমারের সিট্যুয়ে অঞ্চল দিয়ে যাবে। রোববার (১৪ মে) বেলা ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁও আবহাওয়া অধিদপ্তর ভবনে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের মূল ঝুঁকিটা চলে যাবে মিয়ানমার অঞ্চল দিয়ে। টেকনাফ, কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের অঞ্চলগুলো ঝুঁকিমুক্ত হতে চলেছে। এর ফলে শুরু থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে আমাদের যে ঝুঁকির সম্ভাবনা ছিল, এখন আর ততটা ঝুঁকি নেই। 

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার পিক আওয়ার হবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা। এ সময়ে দ্রুত বেগে জলোচ্ছ্বাস প্রবাহিত হবে। তখন ঘণ্টায় ১২০-১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আরও বলেন, বিকেল নাগাদ ঘূর্ণিঝড় মোখা আমাদের অতিক্রম করে গেলেও এর প্রভাব থেকে যাবে আরও দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত। আর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পরিলক্ষিত হবে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে। আমরা আশঙ্কা করছি জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা যদি ৮ থেকে ১২ ফিট পর্যন্ত হয়, তাহলে টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে অস্থায়ীভাবে পানির জলাবদ্ধতা থাকবে। তবে পর্যায়ক্রমে তা কেটে যাবে।


প্রসঙ্গত, সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত একটি ছোট প্রবাল দ্বীপ (মাত্র ৮ বর্গকিলোমিটার)। এটি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে ও মায়ানমার-এর উপকূল হতে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত। 


আমাদের কাগজ/এমটি