ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকে কী কথা হলো শি জিনপিংয়ের?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নানা টানাপড়েন ও উত্তেজনার মধ্যে সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। স্থানীয় সময় সোমবার বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কয়ারে গ্রেট হল অব দ্য পিপলে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিয়ের সঙ্গে ব্লিনকেনের বৈঠক হয়।
বৈঠকের বিষয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, 'চীন নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে এবং দুই পক্ষ (চীন ও যুক্তরাষ্ট্র) প্রেসিডেন্ট (জো) বাইডেন ও আমি বালিতে যে সাধারণ বোঝাপড়ায় পৌঁছেছিলাম তা অনুসরণ করতে সম্মত হয়েছে ।'
নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে বলেন তিনি। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্লিঙ্কেনকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান শি জিনপিং।
চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, 'রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের মিথস্ক্রিয়া সবসময়ই পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা ভিত্তিক হওয়া উচিত। আমি আশা করি এই সফরের মাধ্যমে, জনাব সেক্রেটারি (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক স্থিতিশীল করতে আপনি আরও ইতিবাচক অবদান রাখবেন।'
দুই পক্ষ ‘অগ্রগতি ঘটিয়ে কিছু নির্দিষ্ট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছেছে, এট খুব ভালো’ বলেও মন্তব্য করেছেন শি। তিনি চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ব্লিঙ্কেনের বৈঠককে ‘অকপট ও গভীর আলোচনা’ বলে বর্ণনা করেছেন।
চীনের প্রেসিডেন্ট ‘কিছু নির্দিষ্ট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছানোর’ কথা উল্লেখ করলেও ব্লিনকেনের সফর চলাকালে একমাত্র যে সমঝোতার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তা হলো, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের যুক্তরাষ্ট্র সফরের পরিকল্পনা এবং দুই দেশের মধ্যে আরও কিছু ফ্লাইট এবং সাংস্কৃতিক যোগাযোগ।
শির সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলন করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এ সময় তিনি বলেন, তাইওয়ানের স্বাধীনতা সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে চুক্তি হয়েছে।
চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্লিঙ্কেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নতুন শীতল যুদ্ধ চায় না এবং চীনের ব্যবস্থাও পরিবর্তন করতে চায় না।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকের সময়, মার্কিন কর্মকর্তা বলেছিলেন যে, বালিতে ২০২২ সালের জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে দুই দেশের নেতাদের দ্বারা নির্ধারিত এজেন্ডায় ফিরে আসতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগে রোববার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্লিঙ্কেন। বৈঠকের পর তিনি জানান, ‘খোলাখুলি, বাস্তবসম্মত ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে’।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রে যেমন বড় তালিকা আছে, তেমনই বিরোধের তালিকাটাও কম বড় নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে ব্লিঙ্কেনের সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার সময় ব্লিঙ্কেন কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়ার উপর জোর দিয়েছেন এবং বলেছেন, আলোচনার প্রক্রিয়া কখনো বন্ধ করা উচিত হবে না।
ব্লিঙ্কেনের এই সফরের পর এবং চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্র সফর সফল হলে বছরের শেষে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের সাক্ষাৎ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুই নেতা গত বছরের নভেম্বরে জি-২০ এর শীর্ষ বৈঠকে ইন্দোনেশিয়ায় শেষ সাক্ষাৎ করেছিলেন।
সূত্র: এনবিসি, বিবিসি