আন্তর্জাতিক ২৩ জুন, ২০২৩ ১০:০০

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছেই টাইটান সাবমেরিনের পাঁচ টুকরার সন্ধান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের আশপাশে টাইটান সাবমেরিনের বড় পাঁচটি টুকরার সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বিকেল ৩টায় (বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় তারা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মার্কিন কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার জানান, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে টাইটান সাবমেরিনের বড় পাঁচটি টুকরা পাওয়া গেছে।

সেই সাবমেরিনের কোনো আরোহী বেঁচে নেই: আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়া সাবমেরিনের সব আরোহীই মারা গেছেন বলে জানিয়েছে মার্কিন কোস্টগার্ড।

সংবাদ সম্মেলনে কোস্টগার্ড জানায়, সাবমেরিনটি বিস্ফোরিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেন এবং কখন এটি ঘটেছে সেসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা চলছে।

এই ঘটনা কোনোভাবেই ভুলে যাওয়ার মতো নয় জানিয়ে মার্কিন কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার ওই সাবমেরিনের পাঁচ আরোহীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
 
তিনি বলেন, ইউএস কোস্টগার্ড এবং সমগ্র ইউনিফাইড কমান্ডের পক্ষ থেকে মারা যাওয়া আরোহীদের পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগারকে প্রশ্ন করা হয়, কোস্টগার্ড ওশান গেটের টাইটান সাবমেরিন থেকে মৃতদেহগুলো উদ্ধার করতে পারবে কিনা?

এ সময় জন মাগার বিষয়টি অনিশ্চিত বলে জানান। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, এটি একটি ‘অবিশ্বাস্যভাবে জটিল পরিবেশ’ সমুদ্রের তলায়, ভূপৃষ্ঠের ২ মাইল নীচে।

কোস্টগার্ডের এ কর্মকর্তা জানান, টাইটানিকের চারপাশে সমুদ্রের তলায় চলাচলকারী রিমোট অপারেটিং ভেহিকল (আরওভি) ঘটনাস্থলেই থাকবে। আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য কাজ করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনের কিছুক্ষণ আগেই আটলান্টিকের তলদেশে নিখোঁজ ডুবোযান টাইটানের ৫ আরোহীর সবাই মারা গেছেন বলে ধারণা করে বিবৃতি দেয় টাইটান সাবমারসিবলের অপারেটিং কোম্পানি ওশানগেট।  

গত পাঁচ ছয় দিন ধরেই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হারিয়ে যাওয়া ডুবযান টাইটান। রোববার (১৮ জুন) ওশানগেটের সাবমারসিবল ডুবোযান টাইটান পাঁচ আরোহী নিয়ে কানাডা উপকূলীয় আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে যায়। এর ঠিক পৌনে দুই ঘণ্টার মাথায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর থেকে এটিকে খোঁজার সব রকমের চেষ্টা চালায় মার্কিন কোস্টগার্ডের পাশাপাশি কানাডার কোস্টগার্ডের সদস্যরা।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বেশ কয়েকটি উদ্ধারকারী জাহাজের সমন্বয়ে চলে শ্বাসরুদ্ধকর এই অভিযান। শেষ সময়ে এসে বাড়ানো হয় অভিযানের ব্যাপ্তিও। আটলান্টিকের তলদেশের প্রায় ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চালানো হয় চূড়ান্ত পর্বের অভিযান। একইসঙ্গে আনা হয় পানির তলদেশে চলাচলে সক্ষম ভিক্টর ৬০০০ নামে রোবোটিক্যালি অপারেটেড ফরাসি ভেহিকেল। যা কিনা ডুবোযানটিকে পানির ওপর ভেসে উঠতে বাধাদানকারী কোনো কিছু শনাক্ত হলে সেটিকে সরিয়ে ফেলতে সক্ষম। এই অনুসন্ধানে বৃহস্পতিবার সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায় মার্কিন কোস্টগার্ড।

টাইটানের যাত্রী ছিলেন যারা: প্রাথমিকভাবে ওই সাবমেরিনে থাকা পর্যটকদের সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও পরে জানা যায়, এটিতে পাইলট এবং একজন ক্রু ছাড়াও আরও তিনজন পর্যটক ছিলেন। পর্যটকদের মধ্যে আছেন ব্রিটিশ অভিযাত্রী হামিশ হার্ডিং। তিনি একটি অ্যাভিয়েশন ফার্মের মালিক। এর আগে হার্ডিং মহাকাশেও পর্যটক হিসেবে ভ্রমণ করেছেন হামিশ। এই মিশনে যাওয়ার আগে রোববার নিজের ইন্সটাগ্রামে নিজেই সেই খবর দিয়েছিলেন।

এছাড়া সাবমেরিনটিতে পাকিস্তানি বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান দাউদ ছিলেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তার পরিবার জানিয়েছে, তাদের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য তারা জানেন না।