কাঁচামরিচ বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্ব, ছুরিকাঘাতে আরও একজনের মৃত্যু
ছবি - সংগৃহীত
আমাদের কাগজ ডেস্ক: পাশাপাশি ব্যাবসা, কাঁচামরিচ বিক্রি নিয়ে দ্বন্দ্ব। গত শনিবার সকাল ৮টার দিকে কম দামে কাঁচামরিচ বিক্রির অভিযোগ তুলে বাজারের সবজি বিক্রেতা কয়েকজন মিলে বেধরকভাবে মারধর ও বস্তা কাটা ছুরি দিয়ে এলোপাতারি ছুরিকাঘাতে কামাল হোসেন (৩৮) নামের একজনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। ঘটনার দিন আরও চারজন জখম হয়। ঘটনাটি ঘটে বরিশাল নগরীর কাশিপুরে।
এর আগে একই দিনে সবজি বিক্রেতা আলমগীর হোসেনের (৪০) মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাত ৯টায় মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন মৃতের পরিবারের লোকজন। আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ওসি হেলাল উদ্দিন।
নিহত আলমগীর হোসেন (৪০) নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড দিয়াপাড়া দিঘির পাড় এলাকার তিনু মাঝির ছেলে। সে কাশিপুর বাজারের সবজি বিক্রেতা।
এর আগে শনিবার সকাল ৮টার দিকে কাশিপুর বাজারে কম দামে মরিচ বিক্রি করায় বিক্রেতা ও সাবেক সেনা সদস্য সোহেল রানার সঙ্গে বাজারের সবজি বিক্রেতাদের দ্বন্দ্ব হয়। এতে তাকে বাজারের সবজি বিক্রেতা কয়েকজন মিলে বেধরকভাবে মারধর করে। এক পর্যায়ে সোহেল রানা বস্তা কাটা ছুরি দিয়ে তাদের উপর চড়াও হয়। তার এলোপাতারি ছুরিকাঘাতে কামাল হোসেন (৩৮) নিহত হন। এসময় আরও চারজন জখম হয়। ঘটনার পর সোহেলকে স্থানীয়রা গণধোলাই দিয়েপুলিশে তুলে দেন। আহতদের মধ্যে আলমগীর হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত আলমগীরের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫) ও অপর ভাই জয়নাল আবেদীন (৩৫) এবং আব্দুল মালেক (৬০) বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বরিশাল এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন বলেন, ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলমগীরের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। এর আগের হত্যার ঘটনায় করা মামলায় বিষয়টি সংযুক্ত হবে। নতুন করে আর কোন মামলা হবে না। বিষয়টি আদালতকে অবহিত করা হবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন জানান, শনিবার সকালে মারা যাওয়া কালামের স্ত্রী মাহফুজা বেগম ওই দিনই রাতে এয়ারপোর্ট থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ছুরিকাঘাতকারী সোহেল রানাকে একমাত্র আসামী করা হয়েছে। সোহেল বর্তমানে পুলিশী প্রহরায় বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ হোসেন বলেন, কাশিপুর বাজারের সামনে কমদামে সবজি ও কাঁচামরিচ বিক্রি করছিলো সোহেল রানা। বাজারের ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে মারামারির ও ছুরিকাঘাতে ৬/৭ জন আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী মো. শহিদ জানিয়েছেন, কাশিপুর বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতারা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে কাঁচামরিচ বিক্রি করে। সোহেল রানা বাজারের সামনে মাইকিং করে ১২০ টাকা কেজি দরে মরিচ বিক্রি করে। তখন নিহত কামালসহ আহতরা এসে ওই দামে মরিচ বিক্রি করতে নিষেধ করে। কিন্তু সোহেল রানা রাজি হয়নি। এতে তাকে বাজারের সবজি বিক্রেতা কয়েকজন মিলে বেধরকভাবে মারধর করে। এক পর্যায়ে সোহেল রানা বস্তা কাটা ছুরি দিয়ে তাদের উপর চড়াও হয়। তার এলোপাতারি ছুরিকাঘাতে নিহত কামালসহ পাঁচজন জখম হয়। তাদের হাসপাতালে নেওয়ার পর কামালকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। নিহত কামাল নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাশিপুরের সৈয়দপুর এলাকার এসকান্দার সর্দারের ছেলে।
অভিযুক্ত সোহেল সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ল্যান্স কর্পোরাল ছিলেন। তিনি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সিংহেরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা মৃত সোনামুদ্দিন হাওলাদারের ছেলে। বরিশাল নগরীর ইছাকাঠি সড়কের ভাড়াটিয়া বাসায় থেকে কাশিপুর বাজারের কাঁচামাল বিক্রি করতেন।
আমাদেরকাগজ/এমটি