আন্তর্জাতিক ২৭ আগস্ট, ২০২৩ ০৫:৫৩

প্রিগোশিনের মৃত্যু নিশ্চিত করল মস্কো 

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রুশ সামরিক নেতৃত্ব ও বিদ্রোহ ঘোষক প্রিগোশিন আর বেঁচে নেই। তার  মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। গত বুধবার সন্ধ্যায় রাশিয়ায় উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১০ জন নিহত হয়েছিলেন। সেই উড়োজাহাজের যাত্রীদের তালিকায় প্রিগোশিনের নাম ছিল। এর আগে, গত ২৩ জুন বিদ্রোহ ঘোষণা করেন প্রিগোশিন। 

জানা যায়, রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী ভাগনার গ্রুপের প্রধান ছিল ইয়েভগেনি প্রিগোশিন। 

নিহতদের ডিএনএ পরীক্ষায় প্রিগোশিনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে আজ রোববার রাশিয়ার কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কমিটি বলেছে, নিহত ১০ জনেরই পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। ওই ফ্লাইটের যাত্রীদের তালিকায় যাদের নাম ছিল, তাদের সঙ্গে নিহতদের মিল রয়েছে। 

এক সময় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের খবার সরবরাহকারী ছিলেন প্রিগোশিন। সেই সম্পর্কে সূত্র ধরে পুতিনের পৃষ্ঠপোষকতায় রাশিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধা সরবরাহকারী ভাগনার গ্রুপ গড়ে তুলেছিলেন তিনি। এই গ্রুপের সদস্যরা রাশিয়া সমর্থক আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষে দায়িত্ব পালন করছে। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে সাইবার হামলার পেছনে এই গ্রুপের ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়ে থাকে।

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর পক্ষে লড়াই করেন ভাগনার যোদ্ধারা। তাদের হাত ধরে এই যুদ্ধে মস্কোর বড় সফলতা এসেছিল। তবে রুশ সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে গত ২৩ জুন বিদ্রোহ ঘোষণা করেন প্রিগোশিন। 

ঘটনাটি ছিল ১৯৯৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর পুতিনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। পরে অবশ্য বিদ্রোহ থেকে পিছু হটেছিলেন প্রিগোশিন। সে সময় ভাগনারের ওই বিদ্রোহকে ‘পিঠে ছুরি মারার মতো’ বলে আখ্যা দেন পুতিন। অনেক বিশ্লেষকের আশঙ্কা ছিল, বিদ্রোহের পরিণতি মোটেও ভালো হবে না প্রিগোশিনের জন্য। কারণ, পুতিন তাঁর শত্রুদের ছেড়ে দেন না।

ভাগনার সেনাদের রাশিয়ার প্রতি অনুগত থাকার শপথ নিতে হবে: পুতিন
আফ্রিকায় প্রিগোশিনহীন ভাগনারের কী হবে

এরপর বিদ্রোহ বন্ধের সমঝোতার অংশ হিসেবে ভাগনার যোদ্ধাদের রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ বেলারুশে পাঠানো হয়। প্রিগোশিনকেও বেলারুশে দেখা গিয়েছিল। এরমধ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন তিনি। মস্কো সফরে যাওয়া কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের বৈঠকে তাঁর উপস্থিতির খবরও গণমাধ্যমে এসেছিল।

এর মধ্যে গত বুধবার সন্ধ্যায় প্রিগোশিনের ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ‘এমব্রেয়ার লিগেসি’ রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত হয়। উড়োজাহাজে প্রিগোশিন এবং তাঁর ডান হাত হিসেবে পরিচিত দিমিত্রি উতকিনসহ সাতজন যাত্রী ছিলেন। আর ক্রু ছিলেন তিনজন। তাঁদের সবাই নিহত হন।

এ ঘটনার পরদিন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক ভাষণে পুতিন বলেছিলেন, প্রিগোশিনকে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে চিনতেন। প্রিগোশিন মেধাবী ব্যবসায়ী ছিলেন। তবে তিনি মন্দ কপাল নিয়ে এসেছিলেন।

আমাদেরকাগজ/এমটি