??????? ২৯ আগস্ট, ২০২৩ ০২:৪৯

তোষাখানা মামলার দণ্ডাদেশ স্থগিত, ইমরানকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ আদালতের

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তিন বছরের কারাদণ্ডের রায় স্থগিত করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি)। এর আগে তোষাখানা মামলার রায় ঘোষণার আধা ঘণ্টার মধ্যেই ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর লাহোরের জামান পার্কের বাড়ি থেকে। সেখান থেকে তাঁকে নেওয়া হয় কারাগারে। এর পর থেকে সেখানেই আছেন তিনি। 

আজ (মঙ্গলবার) এক শুনানিতে এই আদেশ দেন আদালত। পাশাপাশি ইমরান খানকে জামিনে মুক্তি দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন ও জিও নিউজের পৃথক দুই প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

প্রধান বিচারপতি আমির ফারুক ও বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহাঙ্গীরির সমন্বয়ে গঠিতে একটি ডিভিশনাল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। গত শুক্রবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ইমরান খানের আপিলের শুনানির কথা ছিল। কিন্তু মামলার প্রতিপক্ষ পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) আইনজীবী অসুস্থ হওয়ায় শুনানি পেছানো হয়। 

আজ শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ফারুক বলেন, ‘আদেশের কপি খুব শিগগির প্রকাশ করা হবে। আমরা এখন যা বলতে চাই তা হচ্ছে, তাঁর (ইমরান খান) আবেদন গৃহীত হয়েছে।’ 

আদালতের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালত ইমরান খানকে ১ লাখ পাকিস্তানি রুপি মুচলেকার বিপরীতে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। 

তোষাখানা মামলায় গত ৫ আগস্ট পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেন ইসলামাবাদের একটি আদালত। পরে তাঁকে নির্বাচনে অযোগ্য বলেও ঘোষণা দেয় ইসিপি। আদালতের সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। সুপ্রিম কোর্টের কাছে অতিরিক্ত ও দায়রা জজ (এডিএসজে) হুমায়ুন দিলাওয়ারের রায় স্থগিতের আবেদন জানায় দলটি। 

এর আগে ইমরান খানকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তর করার আবেদন জানিয়েছে তাঁর দল পিটিআই। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থান বিবেচনায় তাঁকে কারাগারে প্রথম শ্রেণির সুবিধা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। 

পাকিস্তান নির্বাচন কমিশনের করা এই মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পাওয়া উপহার রাষ্ট্রীয় তোষাখানায় জমা না দিয়ে বিক্রির অভিযোগ আনা হয়েছে। 

এদিকে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা খারিজ করে দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। গতকাল সোমবার বেলুচিস্তানের হাইকোর্ট এক রায়ে এই মামলা খারিজ করে দেয়। পাশাপাশি আজ মঙ্গলবার তোষাখানা মামলায় ইমরান খানের ৩ বছরের দণ্ডাদেশ স্থগিত করেছে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। 

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় গত মার্চে এই মামলা দায়ের করা হয়। ইমরান খানের একটি বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। 

সোমবার মামলার রায়ে বেলুচিস্তান হাইকোর্ট বলেন, মামলার কৌঁসুলিরা প্রাদেশিক এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদ্রোহের এই মামলা দায়ের পক্ষে সম্মতি আদায়ে ব্যর্থ হয়েছেন। আদালত আরও বলেন, এই অভিযোগপত্রের বিপরীতে কোনো আইনগত পক্ষ না থাকায় এই মামলা আইনিভাবে কার্যকর নয়। তাই আদালত এই মামলাকে প্রত্যাখ্যান করছে। 

ইমরান খানের আইনজীবী নাইম পাঞ্জুথা এই রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) বলেন, ‘সব প্রশংসার আল্লাহর।’ 

এই দুটি মামলার রায়ে আপাতত অনেকটাই স্বস্তিতে ইমরান খান এবং তাঁর দল। বিশ্লেষকেরা বলছেন, তোষাখানা মামলায় আপিলের রায় প্রকাশের পর ইমরান খানকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার বিষয়টিও নতুন করে ভাবতে হবে। মামলায় ইমরান খানের দণ্ড স্থগিত হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে জারি করা নির্বাচনী নিষেধাজ্ঞাও স্থগিত হওয়ার কথা পাকিস্তানের আইন অনুসারে।

আমাদেরকাগজ/এমটি