রাজনীতি ৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ০৩:১১

আশঙ্কার কাছে আশা কখনোই পরাজিত হবে না : ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
আশঙ্কার কাছে আশা কখনোই পরাজিত হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সারা দেশে আজ যে জাগরণ, ৭ জানুয়ারি ভোট, জনগণ প্রস্তুত। গতকালও (মঙ্গলবার) দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে আকস্মিক যে সভা ফরিদপুরে করেছেন, যত নারী সেখানে ছিল, এ দৃশ্যপট দেখে বোঝা যায়, বরিশালে যে দৃশ্য দেখেছি, সিলেটে দেখেছি, ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে। সে আশাই আমরা করছি। আশঙ্কা তো থাকেই। আশঙ্কা আশঙ্কার জায়গায়। আশা আশঙ্কার কাছে কখনোই পরাজিত হবে না। আশা বেঁচে থাকবে।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা একটা বিষয় লক্ষ্য করেছেন, ক্রমান্বয়ে নির্বাচন কমিশন তার স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে তারা সে অধিকার প্রয়োগ করতে পারছে। দায়িত্ব পালন করতে পারছেন বলেই নির্বাচনে আচরণবিধি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। আচরণবিধি যেখানে লঙ্ঘন হয়েছে যেখানেই তার ব্যবস্থা নিয়েছে। কর্তব্য পালনে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করছে না। নির্বাচন কমিশন আইনগতভাবে স্বাধীন দায়িত্ব যথাযথভাবে যতই পালন করতে পারবে, ততই নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত হবে।

তিনি বলেন, আমরা যেকোনো মূল্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। এ নির্বাচনের মাধ্যমে যে অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা, সেটা আরও গতিময় হবে। দেশের ভবিষ্যৎও সুসংহত হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা। গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় ৭ জানুয়ারি নির্বাচন। ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে লক্ষ্য, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে এ নির্বাচন বিশেষ গুরুত্ব।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত এখন আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে লিফলেট বিতরণ করছে। এখান থেকে তারা বের হতে পারছে না। আজ তারা হরতাল-অবরোধ দিলেও যেখানে সেখানে যানজটে হচ্ছে। দূরবর্তী যানবাহনও চলাচল করছে।

‘বিএনপি ভাষাগত বক্তব্যতে যে পরিবর্তনের কথা বলছে, সেটা তাদের আসল কথা নাও হতে পারে। কারণ বিএনপি বলে একটা করে আরেকটা। তারা সত্যি কথা বলছে এ কথা এখনই বলার সুযোগ নেই। ৪ তারিখ পর্যন্ত তারা লিফলেট বিতরণ করবে, এরপর তাদের ভূমিকাটা কী, সেটা আমরা লক্ষ্য করব।’

অর্থনৈতিক সংকটের কারণে প্রার্থীরা নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছে– এ ধরনের কোনো অভিযোগ নেতাদের কাছ থেকে পাননি বলে জানান তিনি। বলেন, নির্বাচনে একেবারে সীমান্তে, এখন আর এসব দাবি করার সুযোগ নেই।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিনা রহমানের এক বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি ভুল বলেননি। ওনাদের দর্শন, ওনাদের রাজনীতি, ওনাদের নির্বাচন যেভাবে করতেন। আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে আছেন। নির্বাচন শেষে এবং তার পরেও আমাদের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থানে থাকবে। আমাদের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনাররা সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশ বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন– এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের কমিশনাররা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তারা তাদের অভিমত ব্যক্ত করছেন। এখানে আওয়ামী লীগের চিন্তা-ভাবনার মিল না থাকলেও আমরা কিছু বলব না। আমাদের সঙ্গে যদি অমিলও হয়, আমরা কিছু বলব না।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে ড. ইউনূসের দোষী সাব্যস্ত হওয়াটা বাংলাদেশের মানবাধিকার বিপর্যস্ত হওয়ার প্রতীক। কর্তৃপক্ষ স্বাধীনতা খর্ব করে ভিন্ন মতাবলম্বীদের দমন করছে, সমালোচকদের দমন করছে। আমরা জানি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালে কর্মরত আছেন তারেক রহমানের আত্মীয় আইরিন খান। যিনি এক সময় ডেইলি স্টারে কাজ করেছেন। তাদের মন্তব্যটা কেমন হবে, আমরা আগেও লক্ষ্য করেছি। একটা বৈরী মনোভাব এ সরকারের প্রতি তাদের রয়েছে। বাংলাদেশেও টিআইবি, সুজনের যে ভূমিকা, এগুলো সব একই সূত্রে গাঁথা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি জাস্ট একটা কথা বলব, গাজায় ইসরায়েলের যে জেনোসাইড, গণহত্যা চলছে, আমরা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কাছে জানতে চাই, আমাদের দেশে শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি মামলায় আমাদের স্বাধীন আদালত যে রায় দিয়েছেন সেটা নিয়ে তাদের এত মাথাব্যথা। গাজায় গণহত্যা নিয়ে তাদের কী ভূমিকা সেটা আমরা জানতে চাই। অবলা নারী, অবুঝ শিশু, ৯৩ জন সাংবাদিককে সেখানে হত্যা করেছে। সেটা আপনারা জানেন। সাংবাদিকদের ব্যাপারে কিছু বলেছে? একটি মামলায় শ্রমিক অধিকারের যে রায় সে রায়কে কেন কটাক্ষ করছেন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটা কথাও বলেনি।

৭০ ভাগ ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি সেটা বলিনি, আপনি ভুল। আমি যেটা বলেছি, আইআরআই তাদের এক সমীক্ষায় বলেছে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ ভোটার শেখ হাসিনাকে অ্যাপ্রুভাল রেটিং যেটা সেটাতে মতামত এসেছে। এর মানে এই নয় যে ৭০ শতাংশ লোক ভোট দেবে। এ কথা আমি বলিনি। আমি বলেছি, ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে।

এসময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।