রাজনীতি ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০১:৩০

বিদেশী বন্ধুরা বিএনপিকে ছেড়ে চলে গেছে: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের জনগণও বিএনপি সাথে নেই, বিদেশী বন্ধুরা তাদের ছেড়ে এখন চলে গেছে। 

 

আজ সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

 

 

তিনি বলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লম্বা চিঠি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ এর সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপারে বিশেষভাবে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। পিটার হাস ও মার্কিন নীতি কৌশলের প্রতিধ্বনিই করছেন। 

 

সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিএনপির প্রতি প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন আপনারা কি বলবেন? কে আপনাদের ক্ষমতায় বসানোর জন্য আসবে?কে আমাদের হটাতে আসবে? যাদের আশায় ছিলেন তারা তো এখন এক সাথেই কাজ করার জন্য এসেছেন। নেতারা তো অনেকেই পালিয়ে আছেন, অনেকে প্রকাশ্যে আসেন না। এখন আপনাদের সাহসের উৎস কোথায়? কে সাহায্য করবে? দেশের জনগণ আপনাদের থেকে সড়ে গেছে। ২৮ টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। সংসদ বসেছে। অধিবেশনের শুরুতেই স্ট্যান্ডিং কমিটি পর্যন্ত হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি নিজ হাতে লিখেছেন।

 

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আবারও রাজনীতি করতে পারবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা খালেদা জিয়া কোন পর্যায়ে রাজনীতি করবেন কি না বা উনি কি রাজনীতি করবেন এটা বিএনপির নেতাদের প্রশ্ন করাটায় ভাল, এটা তাদের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।

 

সংসদে বিএনপিকে ব্যান করার দাবি উঠেছে, এনিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, দেখুন আমি একটা কথা বলি, সংসদে সবাই কথা বলতে পারেন। সদস্যদের নানা মতামত (অপিনিয়ন) থাকতে পারে। কিন্তু মতামতটাই সিদ্ধান্ত এমনটা মনে করার এখনো কোন কারণ নেই। আমরা এধরণের কোন সিদ্ধান্ত দলীয়ভাবেও আমরা চিন্তা করিনি।

 

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সঙ্ঘাতের ফলে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তিনজন আহত হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যা ঘটছে তা তো আমরা জানি। এটা আমাদের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিষয়। তিনি একটা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। সেটাই আমাদের দলের প্রতিক্রিয়া। এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের আশেপাশের দুই/তিনটা গ্রামের জনগণ বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আমাদের জন্য এটা উদ্বেগের। গোলা, মর্টারের শেল বাংলাদেশের ভূখন্ডেও পড়ছে। তিন জন ইতোমধ্যে আমাদের আহত হয়েছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এসব ব্যাপারে নিশ্চয় মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। 

 

তিনি বলেন, আগস্টের ২৫ তারিখে যখন মিয়ানমারের জনগণ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে, আমাদের এয়ারস্পেস অনেক সময় লঙ্ঘিত হয়েছে তারপরও আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা ছিলো, তারা যতই প্রভোকেট করুক আমরা কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবো না। আমরা যুদ্ধের পক্ষে নয়। আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী। এখানে ব্যাপার টা হলো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। এটা তাদের নিজেদের বিষয়। আরাকান আর্মির সাথে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সেনাবাহিনীর যুদ্ধ। এটা তাদের ইন্টারনাল কনফ্লিক্ট। আমরা আহবান করবো, পার্শ্ববর্তী দেশের জন্য আতংকের কারণ হয় এমন কনফ্লিক্টের সমাধান তাদের নিজেদেরই করা উচিত। এব্যাপারে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটা সমাধান হতে পারে। 

 

চিনের মান্যবর রাষ্ট্রদূত গতকাল আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, আমি তাকেও এব্যাপারে বলেছি আপনাদের কথা তারা শুনে বলেই সারা বিশ্ব জানে। কাজেই আপনারা তাদেরকে যুদ্ধ থেকে, ইন্টারনাল কনফ্লিক্ট থেকে দূরে থাকার জন্য এবং তাদের বিরোধ বাংলাদেশে কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করুক এই বিষয়টা আপনাদের একটু দেখা উচিত। যেহেতু আপনারা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার সে হিসেবে আপনাদের সহযোগিতার আহবান আমরা জানাচ্ছি।

 

বর্তমান পরিস্থিতিতে আবারও যদি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চায় সে ক্ষেত্রে আপনাদের পলিসিটা কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে বলেছেন, আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বলেছেন যে আমরা সে উদারতা দেখানোর ব্যাপারটা আমরা এফোর্ট করতে পারবো না। এমনিতেই একটা বোঝা, তারপর আরেক বোঝা এটা আর সম্ভব নয়। 

 

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্ষণ কান্ডের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের বিভিন্ন ভ্রাতিপ্রতিম, সহযোগী সংগঠন আছে। এই দলের ভিতরে শতভাগ ভাল মামুষ এই দাবি আমরা করতে পারি না। এর মধ্যে খারাপ কাজ ও কিছু লোক করে। খারাপের কাজের জন্য আমাদের একটা বৈশিষ্ট্য হলো এই, আমরা খারাপ কাজ টা প্রশ্রয় দেই না। আইনের আওতায় আসার মত যে অপরাধ তা আইনের আওতায় এনেই করা উচিত। এই পর্যন্ত অনেক দৃষ্টান্ত আছে, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর যারা খারাপ কাজ করেছে, যারা অপরধা করেছে তারা কেউই পার পেয়ে যায়নি। 

 

তিনি বলেন, আবরার হত্যার বিচার হয়েছে, বিশ্বজিত হত্যায়ও কাউকে বিচারহীনতা অবস্থায়... ইম্পিউনিটি যে কালচার সেটা আমরা গড়তে দেয়নি। এটা সবার জানা আছে। এখন কথা হলো একটা দলে ভালর সাথে খারাপ লোকও থাকতে পারে।খারাপ কাজও করতে পারে কিন্তু দল সেটাকে কিভাবে নিচ্ছে। দল কি সে অপরাধ কে প্রশ্রয় দিচ্ছে? দল কি সে অপরাধের ব্যাপারে উদাসীন? আমরা তা নই। আবারও আমি সেটা দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করতে চাই।

 

এসম আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, উপ দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।