নিজস্ব প্রতিবেদক
চাদাবাজির কারণে গরুর মাংসের দাম এখন ৮০০ টাকা কেজি এমন অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একটা বিষয় শুরু হলে রাতারাতি বন্ধ হয়ে যাবে এমন তো ভাবার কোন কারণ নেই।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, চাদাবাজি একটা বিষয় অবশ্যই আছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই চাদাবাজির বিরুদ্ধে কঠিন বক্তব্য রেখেছেন। সংশ্লিষ্ট সকলকে এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। একটা বিষয় শুরু হলে রাতারাতি বন্ধ হয়ে যাবে এমন তো ভাবার কোন কারণ নেই। প্রধানমন্ত্রী বলার পর সবাই নড়েচড়ে বসেছেন। যার যে দায়িত্ব আছে পালন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক সবাই সবার তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে। অর্থনীতিতে যখন সংকট হবে তখন দ্রব্যমূল্য, বাজার উঠানামা করে। উঠানামা করে এটা বাজারের ধর্ম। অপেক্ষা করেন, আপনাদের তো না খাইয়ে রাখেনি, দেশের মানুষ খেতে পারছে। একটা মানুষও না খেয়ে মরেনি। দেশের মানুষ অনেক ভাল আছে।
অন্য আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যা হয়নি সেটা আবারও হবে, আমেরিকা ফিরে গিয়ে কি বলবে এনিয়ে স্পেকুলেশনের কোন প্রয়োজনীয়তা কি আমাদের আছে? আমরা বুঝবো কি বলে গেছেন। আবার আমেরিকায় গিয়ে কি বলবেন সে সব নিয়ে এতো মাথা ঘামানোর কোন প্রয়োজন তো আমাদের নেই। দেখুন একটা কথা বলে রাখি, আমরা বিদেশি বন্ধুর সাথে বন্ধুত্ব করতে চায়, বন্ধুর পরিবর্তে যারা প্রভুর ভুমিকায় আসতে চান সে প্রভুর দাসত্ব আমরা মানি না। এটাই আমাদের পররাষ্ট্র নীতি।
বিএনপির সাথে মার্কিন প্রতিনিধি দল বৈঠক করলেও আওয়ামী লীগের সাথে করেনি এটাকে কোন সংকট মনে করছেন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ কোন সংকটের কথা বলেনি, কেন বলবে? বিএনপির সাথে তাদের বৈঠক করে সেটা নির্বাচনের আগে একটা পরিস্থিতি ছিলো। তখন এই বৈঠক সরকারি দল, বিরোধী দল সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে করার দরকার ছিলো। এখন তারা মূলত এসেছে সরকারের সাথে সম্পর্ক আরও জোড়দার করতে। তাদের সঙ্গে একটা বৈঠক করেছে তাদের মতামত বা পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের কি ওপিনিয়ন, তাদের কি ভিউজ সেটা জানাটা তারা যৌক্তিক মনে করেছে। সে কারণে বৈঠক করেছে। তারা তো আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেও তো আমাদের দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টার সাথে কথা বলেছে কাজে এখানে কোন ঘাটতি আছে এটা আমরা মনে করছি না।
গত বছরের তুলনায় এবছর প্রায় দিগুন ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করতে হবে এনিয়ে সরকার উদ্বিগ্ন কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ঋণ পরিশোধ করতে হবে। বিশ্ব সংকটের কারণে সারা দুনিয়াতেই এখন অর্থ সংকট প্রধান হয়ে দাড়িয়েছে। এসময় ঋণ আগের তুলনায় বাড়তে পারে কিন্তু বাংলাদেশ এ যাবত ঋণ খেলাপি হওয়ার কোন রেকর্ড রাখেনি। আমরা সে ব্যবস্থা করছি। আমরা ঋণ খেলাপি থাকবো না এটুকু বলতে পারি।
দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণে জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে যেতে পারে এমন আশংকা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন,আমাদের দেশের জনগণ প্রমাণ করে তারা এতো উস্কানি, এতো আন্দোলন যে বাংলাদেশ উত্তাল সাগর হয়ে যাবে এসবের পর তাদের ঐ পিকনিক পার্টি সমাবেশের নামে সেখানে জনগণ প্রলুব্ধ হয়নি। প্ররোচিতও হয়নি। দেশের জনগণ সারা বিশ্বের খবর রাখে। সারা বিশ্বের সব খবর নিয়ে গ্রামে চায়ের দোকানে রীতিমতো গবেষণা হয়। মানুষ বুঝে এখানে সরকারের দোষ নেয়। বিশ্বে যে সংকট দ্রব্যমূল্য নিয়ে সে দ্রব্যমূল্য বাংলাদেশের একার নয়। সারা দুনিয়াতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। পৃথিবীর একটা দেশ দেখান যেখানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক অবস্থায় আছে। তবে আমাদের জনগণের ক্রয়ক্ষমতা এখনো আছে। আমরা আশা করি সামনের রমজানেও জিনিসপত্র এভেইলেবল থাকবে।