জাতীয় ৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:১৫

আমাদের জন্য ট্রেন অপেক্ষা করছে ,অবিশ্বাস্য লাগছে 

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতাম। অনেক বছর পর দেখলাম ট্রেন আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছি না। 
ঈদ যাত্রার চতুর্থ দিনে নির্বিঘ্নে ট্রেনে উঠতে পেরে এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন লালমনিরহাটগামী বুড়িমারী এক্সপ্রেস (৮০৯) ট্রেনের একজন যাত্রী। ট্রেনটি সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ৫ নম্বর প্লাটফর্ম ছেড়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, স্টেশনে এসে সুন্দরভাবে ট্রেনে উঠলাম। ভিতরের পরিবেশ অনেক সুন্দর। সবাই যার যার সিটে বসতে পারছে, মালামাল রাখতে পারছে। কোনো অসুবিধা নেই।


শনিবার সকালে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, ট্রেন যাত্রীদের মধ্যে একটি উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে প্ল্যাটফর্মের দিকে প্রবেশ করছেন। শুরুতেই যাত্রীদের সঙ্গে টিকিট রয়েছে কি না সেটি চেক করছেন টিটিইরা। পরের ধাপে চেক করা হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র আছে কি না। সেটির নামের সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে কি না যাত্রীদের টিকিট। শেষ দফায় প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের মুহূর্তেও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ট্রেনের টিকিট চেক করে দেখছেন। এরপরেই যাত্রীরা ট্রেনের সিডিউল দেখে নির্ধারিত গন্তব্যের প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করছেন। আর যাদের সঙ্গে টিকিট নাই, সেটা কোথাও ধরা পড়লেই তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।


যাত্রীরা জানিয়েছেন, ঢাকা স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়ার মতো সহজ কিছু এবার নেই। দৃশ্যত বিমানের মতো না হলেও একজন যাত্রীর জন্য সিস্টেমটা বিমানের মতোই হয়েছে। সহজেই নিজের আসন পর্যন্ত যাওয়া যাচ্ছে ও মালামাল রাখা যাচ্ছে।

কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের যাত্রী আমিনুল ইসলাম বলেন, যাত্রা শুরুর ৪৫ মিনিট আগে আমাদের ট্রেনটিকে প্ল্যাটফর্মে দেওয়া হয়েছে। এতে করে কোনো রকম ধাক্কাধাক্কি ছাড়া ট্রেনে উঠতে পেরেছি। মালামাল রাখা নিয়েও কোনো দুশ্চিন্তা করতে হয়নি। আসলে প্ল্যাটফর্ম এলাকায় ট্রেনের যাত্রী ছাড়া অন্য কোনো মানুষ তেমন একটা নেই। 

তিনি আরও বলেন, এই কয়েক বছর আগেও এমন হয়েছে যে নিজের আসন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। আমার আসনে বসে গেছে অন্যজন। আর আমাকে যেতে হয়েছে দাঁড়িয়ে। সেই পরিমাণ অবৈধ যাত্রী এখন আর নেই। 


পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেসের যাত্রী রমিজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকা থেকে ট্রেনে ওঠার ব্যবস্থাপনা খুব ভালো হলেও এর পরের স্টেশনগুলো থেকে সেটি আর থাকে না। গতকাল আমার একজন বন্ধু গিয়েছে বাড়িতে। তার কাছ থেকে জেনেছি প্রথম দুই তিনটা স্টেশন পরেই নাকি মানুষের ভিড় হয়ে যায়। টিকিট বিহীন যাত্রীরা ট্রেনে ওঠে।  

ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, দিনের প্রথম ট্রেন রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট বিলম্বে ছেড়েছে। ট্রেনটি ভোর ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ঢাকায় এসে পৌঁছায় ৬টা ২০ মিনিটে এবং ঢাকা ছেড়ে যায় সকাল ৭টা ৪৫ মিনিট। এ ছাড়া আরও দুটি ট্রেন ১৫ থেকে ২০ মিনিট বিলম্ব হয়েছে। বাকি ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়েই ঢাকা স্টেশন ছাড়ছে।