সারাদেশ ২৭ মে, ২০২৪ ০৫:০৪

হাতিয়ার অসংখ্য মানুষ গৃহহীন, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

জেলা প্রতিনিধি
নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেছেন, হাতিয়ার অসংখ্য মানুষ গৃহহীন হয়েছে, জোয়ারে ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। সোমবার (২৭ মে) দুপুরে মোবাইল ফোনে বিষয়টি বলেন। এ ছাড়া বেলা সাড়ে ১১টায় দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বরাবর এক চিঠিতে ঘূর্ণিঝড় রেমালে হাতিয়া উপজেলার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে অবহিত করেন।

চিঠিতে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা ‌‘বৃহত্তর নোয়াখালীর একমাত্র দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে সাত-আট ফুট উচ্চতার জোয়ারে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে। বেড়িবাঁধ না থাকায় নিঝুমদ্বীপ, ঢালচর ও চর খাসিয়া সম্পূর্ণ পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বঙ্গোপসাগরের মুখে অবস্থিত হাতিয়ার সর্ব দক্ষিণের জনপদ নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯ হাজার পরিবারের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রবল জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়েছে। প্রায় ৩৫০০ কাঁচা ঘর সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। ১০০ কিলোমিটার, কাঁচা রাস্তার প্রায় ৬০ ভাগই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শতাধিক পুকুরের মাছ ও অসংখ্য গবাদিপশু পানিতে ভেসে গেছে। জমির ফসল সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়েছে।

চিঠিতে মোহাম্মদ আলী আরও উল্লেখ করেন, অনেক কাঁচাঘর ও কাঁচা রাস্তা বিধ্বস্ত হয়েছে। জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। চর ঘাসিয়ায় ২০ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। গবাদি পশু পানিতে ভেসে গেছে। নষ্ট হয়েছে ফসলের ক্ষেত। চানন্দী ইউনিয়নের অনেকাংশে বেড়ি বাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে। ৪ হাজার পরিবারের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। প্রায় ৫০০ কাঁচা ঘর পানিতে ভেসে গেছে। রাস্তা-ঘাট ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গবাদিপশু ও আবাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

পুনরায় জোয়ারে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা করে মোহাম্মদ আলী বলেন, হরণী, সুখচর, নলচিরা, চরকিং, চরঈশ্বর, তমরদ্দি, সোনাদিয়া, বুড়িরচর ও জাহাজমারা ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাসরত মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন অসংখ্য পরিবার এবং অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। এই মুহূর্তে প্রবল ঝড়ো হাওয়া বইছে। দমকা বাতাস ও প্রচুর ঝড় হচ্ছে। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক উচ্চতায় পুনরায় জোয়ার শুরু হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালে উপকূল বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা খবর পাচ্ছি। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। তবে সকল বিভাগ থেকে সম্মিলিতভাবে ক্ষয়ক্ষতির কোনো হিসাব আমরা পাইনি। পেলেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব। আমরাও সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।