নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়ে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন সবার আন্দোলন ছিল। পরবর্তীসময়ে এটাকে সর্বজনীন করতে হলেও আমাকে সবার কাছে যেতে হবে। তোষামোদি করা অপরাধ কি না এটা জানতে চাই? এটা কি অপরাধ? এটা অপরাধ নয়। আমি যদি কারও সমালোচনা করতে পারি, আমি শর্তহীন প্রশংসাও করতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড়ে কেউ আমার নাম বেচে লাখ টাকা নিয়ে আসে, সেটায় আমি প্রতিবাদ জানাতে পারি। এটার জন্য সবাইকে অসম্মান করলে আমাদের কাজের পরিধি কমে যায়। আমরা ডিমোরালাইজড হই। আমরা ত্রাণ তুলি সেটাতে সমস্যা, শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠান করি সেটাতেও সমস্যা।’
বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ধানমন্ডির টিআইবি কার্যালয়ে আয়োজিত ‘নতুন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন: তরুণদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীবসহ তরুণ পেশাজীবী, গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষার্থীরা।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান বাংলাদেশে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, রাতে ঘুমানোর আগে যাই একটু সমন্বয়কদের গালাগালি করে আসি। কমেন্টসে গালাগালি করে আসি। কারণ এটা সবচেয়ে সেইফ জোন। আমরা ভলান্টিয়ার বেসিসে কাজ করছি, আমরা অথরিটি না। আমরা সবার সহযোগিতা চাই। আমরা অথরিটি না, লিগ্যাল এনটিটি নই।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ ডিভোর্সের সমস্যা থেকে শুরু করে সচিব পদবি চেঞ্জ করার জন্য (আমাদের কাছে) আসেন। কিন্তু আমাদের অথরিটি নাই। যদি আমাদের কোনো ভুল থাকে সেটা কীভাবে সংশোধন করবো, কীভাবে অ্যাড্রেস করবো- সে বিষয়ে প্রপার সলভ করেন। এটা হলে আমাদের জন্য কাজ করা সহজ হয়।’
তরুণরা সুশীল সমাজের পরামর্শ চায় জানিয়ে এ সমন্বয়ক বলেন, ‘একটা রিয়েলস্টিক এটিটিউড তৈরি হয়েছে, এটার দায়ভার সুশীল সমাজ এড়াতে পারে না। বুদ্ধিজীবীরা ১৯৭১, ২০২৪ এ ফেইল মারছেন। আমাদের ক্ষমতা বিমুখতা বা আমরা কেন ভয় পাই- এ দায়ভার সুশীল সমাজকে নিতে হবে। ২০২৪ যদি ৯০ এর পুনরাবৃত্তি হয়, একাত্তরের পুনরাবৃত্তি হয়, ৫২’র পুনরাবৃত্তি হয় তাহলে আমাদের যে শক্তি বা সামর্থ্যের জায়গা তৈরি হয়েছে সেটা আর কখনোই পুনরায় মঞ্চায়ন সম্ভব হবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, ‘জনগণের ভাষা যেটা লড়াই ও প্রতিরোধের মাধ্যমে তৈরি হয়েছে সেটাকে আমরা ক্ষমতায় আসতে দেখিনি। আমাদের রাজনৈতিক দল থেকে পরিবারতন্ত্র সরাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। এই আকাঙ্ক্ষার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি রূপান্তর করতে হবে। এই রূপান্তর কোনো মাইনাস প্রক্রিয়া নয়। গণঅভ্যুত্থানে যে স্পিরিট তৈরি হয়েছে সেটি দেখে থাকলে, অনুধাবন করতে পারলে দলগুলোতে রূপান্তর ঘটবে। আমরা দেশের রাজনৈতিক দলগুলোতে রূপান্তর দেখতে চাই। আমরা এই বোঝাপোড়া করতে চাই, সবার সঙ্গে বসতে চাই।’
আমাদের কাগজ/টিআর