প্রবাসের কথা ১২ নভেম্বর, ২০১৯ ০২:৪৭

শেষ হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমদানি মেলা

প্রবাসের কথা ডেস্ক।।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমদানি মেলা চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইমপোর্ট এক্সপোর (সিআইআইই) দ্বিতীয় আসর বসেছিল চীনের সাংহাইয়ে। বিশ্বের ১৫৫ টি দেশ ও ২৬ টি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে নিয়ে আয়োজিত ছয় দিনব্যাপী এই মেলা শেষ হয় গত রোববার।

এতে বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নে অংশ নেয় নয়টি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া বেসরকারি পর্যায় থেকেও বাংলাদেশি বেশ কিছু উদ্যেক্তা পাটজাত, কৃষিজাত ও চামড়াজাত পণ্য ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা নিয়ে মেলায় হাজির হন। 

নিজেদের বাজারকে আরও উদারীকরণের লক্ষ্যে ২০১৮ সাল থেকে চীন তাদের বাণিজ্য শহর সাংহাইয়ে এই মেলার আয়োজন করে আসছে। চীনের বৃহত্তম আমদানি-রপ্তানি মেলা ক্যান্টন ফেয়ারের পর এই মেলা এখন বিশেষ গুরত্ব পাচ্ছে নানা দেশের বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের কাছে। প্রথম আসর থেকেই বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে আসছে এ মেলায়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মহাপরিচালক অভিজিৎ চৌধুরি বলেন, ‘এবারের মেলায় বাংলাদেশি প্যাভিলিয়নে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের রপ্তানি বাণিজ্যে বাড়তি কিছু যোগ হবে, পাশাপাশি দু-দেশের সম্পর্কেও তৈরি হবে নতুন মাত্রা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতে অনেক চীনা প্রতিষ্ঠান চূড়ান্ত আগ্রহ দেখিয়েছে পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে অনেক বিনিয়োগ সম্ভাবনাও।’

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ছাড়াও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বেপজা, বেজা, পর্যটন করপোরেশনসহ বিভিন্ন স্টলে আশানরূপ সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা জানান, বাংলাদেশে চূড়ান্ত বিনিয়োগে এরই মধ্যে অনেক চীনা প্রতিষ্ঠান নিয়মিত যোগাযোগ করছেন, কেউ কেউ এর মধ্যে বাংলাদেশে গিয়ে তাদের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন। 

অন্যদিকে বেসরকারি পর্যায়ে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি স্টলেও ব্যাপক সাড়া মিলেছে বলে জানিয়েছেন এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান দাদা বাংলা মেলায় পাটজাত নানা পণ্য নিয়ে হাজির হয়। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নুরুস সাফা জানান, ‘বিভিন্ন ধরনের পাটজাত পণ্যকে চীনা বাজারে আরও জনপ্রিয় করতে আমাদের প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছে। জনবহুল চীনে পরিবেশবান্ধব পণ্যের ওপর চীন সরকার জোর দেওয়ায় বাংলাদেশী পাট নিয়ে এ দেশীয় ক্রেতারা ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাই এইবার আশার চাইতে অনেক বেশি সাড়া পেয়েছি।“

মেলায় উদ্বোধনী ফোরামে বাংলাদেশের পক্ষে সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। অন্যদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিচালক (টেক্সটাইল) মো. সামসুউদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল এবার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া মেলায় চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করনে।

৩ লাখ ৬০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের এই এক্সপোতে ছিল নানা ধরনের পণ্যের সমাহার। মেলায় সাতটি ভাগে দেড়শতাধিক দেশের প্রায় চার হাজার প্রতিষ্ঠানের স্টল ছিল। যেখানে নিত্যনতুন তৈরি পোশাক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তি থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য-সেবা, চিকিৎসা সামগ্রী ও অত্যাধুনিক অটোমোবাইল প্রযুক্তি স্থান পায়।

লেখক: পিএইচডি গবেষক, সেন্ট্রাল চায়না বিশ্ববিদ্যালয়।