ধর্ম ও জীবন ১৫ নভেম্বর, ২০১৯ ১২:১৭

ওমরাহ পালন না দান-খয়রাত, কোনটি বেশি উত্তম?

ধর্ম ও জীবন ডেস্ক।।

ওমরাহ করার সামর্থ্য থাকলে জীবনে একবার উমরা করা সুন্নতে মোয়াক্কাদা। ওমরাহ জন্য কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। শুধু জিলহজ মাসের ৯-১৩ তারিখ পর্যন্ত পাঁচ দিন ওমরাহ করা মাকরূহ। এছাড়া বছরের যে কোনো সময় ওমরাহ করা জায়েজ। রমজান মাসে ওমরাহ করা সবচেয়ে উত্তম। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমজানে একটি ওমরাহ করা আমার সঙ্গে একটি হজ করার সমতুল্য। -সহিহ বোখারি: ১৮৬৩

পরিভাষায় ওমরাহ বলা হয়, শরিয়ত নির্দেশিত বিশেষ পদ্ধতিতে বাইতুল্লাহর জিয়ারত করা। বিশেষ পদ্ধতিটি হলো- ইহরাম পরিধান শেষে তালবিয়া পাঠ করে কাবা শরিফের চর্তুদিকে সাতবার তওয়াফ করা, সাফা ও মারওয়ার মধ্যস্থলে সাঈ করা এবং মাথা মুণ্ডানো।

হজ ও ওমরাহ মধ্যে অনেক ধরনের পার্থক্য বিদ্যমান। বার বার হজ-ওমরাহ করা জরুরি নয়। তবে হ্যাঁ, সামর্থ্য থাকলে বার বার হজ-ওমরাহ করা যেতে পারে। কেননা, হাদিসে হজ-ওমরাহ বার বার করার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবন মাসঊদ (রা.) বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা হজ ও ওমরাহ একটার পর অপরটা করো; কারণ এ দু’টো আমল দারিদ্র্য ও গোনাহ বিদূরিত করে দেয়। যেমন ভাটার আগুনে লোহা ও সোনা-রূপার ময়লা জং দূরিভূত হয়। একটি কবুল হজের প্রতিদান তো জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়। -ইবনে মাজাহ: ২৮৮৭

অনেকে বলেন বার বার ওমরাহ করা উত্তম না সদকা করা উত্তম? এর উত্তরে ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, মানুষের যাবতীয় আমলের মূল উদ্দেশ্য হলো- আল্লাহতায়ালাকে খুশি করা। সুতরাং আমাদের উচিত এমন আমলের তাওফিক কামনা করা যাতে তিনি অধিক খুশি হন।

অনেক সময় এমন হয় যে, আল্লাহতায়ালা কোনো আমলকে অন্যান্য আমলের তুলনায় অধিক পছন্দ করেন মানুষের অবস্থা কিংবা সময়ের ভিন্নতার কারণে। হাদিসে যেমন হজ-ওমরাহ বার বার করার ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। অনুরূপভাবে সদকা করার প্রতিও উৎসাহিত করা হয়েছে। সুতরাং বার বার ওমরাহ করা এবং সদকা করা উভয়টিই আল্লাহতায়ালার পছন্দনীয় আমল। তবে কোনটি তার কাছে বেশি পছন্দের, এটা নির্ভর করবে অবস্থা ও সময়ের ওপর।

আল্লাহতায়ালা মানুষকে ‘বিবেক-বুদ্ধি’ নামক নিয়ামত দিয়েছেন, সুতরাং মানুষের বিবেচনা করা দরকার এই দুই আমলের মধ্যে কোন আমলটি করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন বেশি উদ্দেশ্য হবে, আল্লাহকে বেশি রাজি-খুশি করা যাবে এবং অন্তরকে মানুষের দৃষ্টি হতে সম্পূর্ণ খালি রাখা যাবে। তারপর সেই আমলটিকে প্রাধান্য দিন এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির আশা রাখুন।