জাতীয় ২৪ নভেম্বর, ২০২০ ০৫:৪১

‘বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর মতো সকল গুণের অধিকারি নেতা পাওয়া কঠিন’

ডেস্ক রিপোর্ট

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, লেনিন, চেগুয়েভার, মাওসেতুং, হুচিমিন কিংবা কার্লমার্কসসহ বরেণ্য অনেক বিশ্ব নেতৃত্বকে অধ্যয়ন করেছি, কিন্তু বিশ্বে বঙ্গবন্ধুর মতো সকল গুণের অধিকারি একজন নেতা খুঁজে পাওয়া কঠিন। মুজিব জন্মশতবর্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে শ্রদ্ধা জানানো হয়

গতকাল সোমবার রাতে ঢাকায় মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ওয়েবিনারে ডাক ভবনে বিসিএস পোস্টাল এসোসিয়েশন প্রকাশিত চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবলমাত্র হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিই ছিলেন না, তিনি ছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ মানুষ এবং রাজনীতিবিদ। শেখ মুজিব ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত দুটি রাষ্ট্র গঠনের বিপরীতে একটি ভাষাভিত্তিক আধুনিক জাতিরাষ্ট্র গঠনের দূরদর্শী স্বপ্ন দেখেন। ভাষাভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের ধারণা তখন ইউরোপ, জাপান, কোরিয়া বা চীনের বাইরে প্রসারিত হয়নি।

এ অঞ্চলে ভাষা রাষ্ট্র ধারণা ছিলো অকল্পনীয় বরং পাকিস্তান ভারত তৈরি হয় সাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে। ৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জনগণকে সংগঠিত করে জনগণকে সাথে নিয়ে জনযুদ্ধ করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। পূর্ব বাংলাকে নিয়ে আলাদা রাষ্ট্রগঠনে ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাব পাশ কাটিয়ে ১৯৪৭ সালে দুটি রাষ্ট্র গঠন ছিলো সাম্প্রদায়িক সিদ্ধান্ত উল্লেখ করে জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, সিলেট পূর্ব বাংলা থেকে যাতে খন্ডিত না হয় তা রুখতে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের পক্ষে জনমত গড়তে সিলেট গিয়েছিলেন।

৪৮ সালে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ধারণা প্রকাশ পায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ভূ-খণ্ডের গোটা জনগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্ব অন্ধের মতো অনুসরণ করেছে। জনাব মোস্তাফা জব্বার, ৬৮‘র আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান, একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের পেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, আগরতলা মামলা দায়ের করার পর তৎকালীন পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা বেগম ফজিলাতুন্নেছাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রেফতারের হুমকি দেয়।

লাহোরে গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জোরালো আপত্তি জানান এবং প্রতিহত করেন। বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ, তাই বেগম মুজিবের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল আগরতলা ষড়যন্ত্র নামে খ্যাত মামলা প্রত্যাহার করতেই হবে। বঙ্গবন্ধু যেন শক্ত থাকেন সে বিষয়ে তিনি পরামর্শ দেন। বেগম ফজিলাতুন্নেছার তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান বেগবান হয়।

প্রবল গণ-অভ্যূত্থানের মুখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্ত হলেন ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯। বঙ্গমাতার দূরদর্শিতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ খুলে দিয়েছিল। মোস্তাফা জব্বার কাজের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্লের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে ডাক কর্মকর্তাদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

মন্ত্রী ডিজিটাল ডাকঘর বিনির্মাণের মধ্য দিয়ে ডাকঘরকে ডিজিটাল সেবা প্রতিষ্ঠানে হিসেবে গড়ে তুলতে তার সংকল্প পুনঃব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: সিরাজ উদ্দিন এবং বিসিএস পোস্টাল এসোসিয়েশনের সভাপতি জেসান ইসলাম বক্তৃতা করেন।