জাতীয় ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০৬:৫১

নাগরিকত্ব দিলেই মিয়ানমারে ফিরবো: চীনা দূতকে বললো রোহিঙ্গারা

কক্সবাজারে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

কক্সবাজারে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

জাতীয় ডেস্ক।।

সরাসরি দেশে যাওয়ার সাথে সাথে নাগরিকত্ব ও সহায় সম্বল ফেরত পেলে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার কথা চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিংকে জানিয়েছেন মিয়ানমার থেকে জীবন বাচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা।

চীনের রাষ্ট্রদূতসহ একটি প্রতিনিধি দল রোববার বিমানযোগে কক্সবাজার হয়ে দুপুর ১২টার দিকে তারা বান্দরবান জেলার নাইখ্যাংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের নো ম্যানস ল্যান্ডে থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।

চীনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মত বিনিময়ে মিয়ানমার সরকারের প্রতি রেহিঙ্গাদের অবিশ্বাস ও অনাস্থার কথা জানিয়ে রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না। এর আগেও তারা অনেকবার বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে। তাই সরাসরি নাগরিকত্ব ও সহায় সম্বল ফেরত দিলেই আমরা ফিরতে পারি।’

কয়েকদফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরার ব্যাপারে অনাগ্রহের কারণ জানতে চান চীন থেকে আসা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।

আরসা বা কোনো এনজিও সংস্থার লোকজন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরতে অনুৎসাহিত করছে কিনা চীনের প্রতিনিধি দলের এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গারা জানান, মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমারে ফেরত যেতে কেউ বাধা দিচ্ছে না। তাদের দাবিগুলো মেনে নিলে এখনই চলে যেতে প্রস্তুত সবাই।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ২৫ আগস্ট রাখাইনের ৩০টি নিরাপত্তা চৌকিতে একযোগে হামলার ঘটনা জেরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন শুরু করে। প্রাণ বাঁচাতে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি শিবিরে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৫৫৭। তাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই বেশি।

এদিকে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চুক্তি সই করে। পরে দুই দেশ ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামে চুক্তি করে।

চুক্তি অনুযায়ী, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর দুই বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও একজন রোহিঙ্গা মিয়ানমারে ফেরত যায়নি।