রাজনীতি ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ০৪:০৬

নেতৃত্বের আশায় দৌড়ঝাঁপ, সরগরম মধুর ক্যানটিন

নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ সাড়ে চার বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সম্মেলন। আগামী ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায় সম্মেলন হবে। আসবে নতুন নেতৃত্ব। সম্মেলন ঘিরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বেড়েছে নানামুখী তৎপরতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র মধুর ক্যানটিন এখন বেশ সরগরম। টিএসসি, হাকিম চত্বর এবং পিয়ারু চত্বরে আড্ডায়, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে এই সম্মেলন।

২০১৮ সালের ২৯ এপ্রিল ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন হয়। পরে ওই বছরের ৩১ জুলাই সনজিত চন্দ্র দাসকে সভাপতি সাদ্দাম হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটিই এখন বহাল রয়েছে। ২১ নভেম্বর মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সম্মেলন দুদিন এগিয়ে নিয়ে আসা হলেও ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন পূর্বনির্ধারিত ডিসেম্বর বহাল রাখা হয়।

তারিখ ঘোষণার পর থেকে নড়চড়ে বসেছেন পদপ্রত্যাশীরা। নিজেদের ইমেজ ধরে রাখতে বিভিন্ন মানবিক কাজে সময় দিচ্ছেন তাঁরা।একই সঙ্গে ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা, আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতা, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা, গোয়েন্দা সংস্থা গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন পদপ্রত্যাশীরা। আসন্ন সম্মেলনে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে দেখানোর চেষ্টায় মত্ত তাঁরা।

পার্টি অফিস, আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় মধুর ক্যানটিনে আলোচনার আধেয় হয়ে উঠেছে ঢাবি শাখার সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পোস্টার, ব্যানারসহ আনুষঙ্গিক সবকিছু তৈরি করা হচ্ছে। ছাড়া ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে সমন্বয় করে সম্মেলনের অতিথিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। আশা করি, সুন্দর একটি সম্মেলন আমরা উপহার দিতে পারব।

বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে নারী নেতৃত্ব সামনে নিয়ে আসার কথা বলেন। তারই পথ ধরে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদে নারী নেতৃত্বের সম্ভাবনা দেখছেন ছাত্রলীগের নেত্রীরা। সে হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি তিলোত্তমা শিকদার, ফরিদা পারভীন, জিয়াসমিন শান্তা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজীর হোসেন নিশি, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণাবিষয়ক উপসম্পাদক রনক জাহান রাইন উপ-সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক ফাল্গুনী দাস তন্বী।

নারী নেতৃত্বের সম্ভাবনার বিষয়ে ফরিদা পারভীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে, সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত সর্বত্র নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছেন। তিনি সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের সামনের সারিতে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। নারীরা এখন সর্বক্ষেত্রে পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে পারদর্শিতা দেখাচ্ছে। যেকোনো দুর্যোগে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ফলে নেতৃত্ব নির্বাচনে নারী নাকি পুরুষসেটা না দেখে যোগ্যতা দক্ষতার মূল্যায়ন করার সময় এসেছে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ফাল্গুনী দাস তন্বী বলেন, আমাদের আপা (প্রধানমন্ত্রী) স্বয়ং নারী হয়ে দেশকে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, তাই আমি মনে করি নারী-পুরুষের মাঝে বিভেদ তৈরি না করে নেতৃত্ব আসুক। নেতৃত্বের যোগ্য নারীও হতে পারে, রকম একটা যোগ্য দৃষ্টান্ত আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন্দ্রীয় কমিটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটির শীর্ষ পদে নারী নেতৃত্ব আসলে সংগঠনকে সুসংগঠিত সক্রিয় করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আমি মনে করি।এদিকে বিজ্ঞানের বিভাগগুলো থেকে ঢাবি ছাত্রলীগে শীর্ষ নেতৃত্ব আসছে না অনেক

বছর। তাই সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে শীর্ষ নেতৃত্ব আশা করছেন বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রলীগ-নেতারা। পদপ্রত্যাশী . মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল সংসদের সাবেক জিএস ইরফানুল হাই সৌরভ বলেন, নেতৃত্ব ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং পরবর্তী সময়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের কান্ডারি হয়ে পথ দেখাবেএমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছি।

 

 

 

 

আমাদের কাগজ/টিআর