রাজনীতি ৬ ডিসেম্বর, ২০২২ ০৪:২২

ব্যাংক গুজবে কান দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী 

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

আমাদের কাগজ ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ব্যাংকে টাকার কোনো সংকট নেই; পর্যাপ্ত টাকা আছে, গুজবে কান দেবেন না। আমাদের অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে বলেই বাজেটের কলেবর বাড়ছে।’ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সরকার প্রধান বলেন, টাকা নেই বলে অনেকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরে নিয়ে যাচ্ছে। এদের কি চোরের সঙ্গে সখ্যতা আছে কিনা আমার প্রশ্ন। ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ঘরে রাখলে চোরের পোয়া বারো। চোর চুরি করে খেতে পারবে। সেই ব্যবস্থা করে দিচ্ছে কেউ কেউ। 

 

তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) রাতেও আমি অর্থসচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছি। আজকে সকালে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, আল্লাহর রহমতে আমাদের কোনও সমস্যা নাই। প্রতি ব্যাংকেই টাকা আছে। কাজেই আমি বলবো গুজবে কেউ কান দেবেন না। এটাই আমার সকালের কাছে অনুরোধ। এ সময় তিনি সোমবারও অর্থমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে বলেন, অর্থনৈতিকভাবে এখনো আমরা ভালো আছি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে খালেদা জিয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছে মন্তব‌্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই ক্ষমতায় এসেছে তার সরকার দেশ গড়তে স্বাক্ষরতার হার বাড়াতে ছাত্রদের হাতে বই তুলে দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের সময়ে প্রত‌্যেকটি প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, সেশনজট। সারাদেশে প্রতি রাতে কারফিউ। এরশাদও জিয়ারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে তার পেটুয়া বাহিনী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে দেয়। ২০০১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ‌্যালয়ে ভিসি অফিসে ছাত্রদলের সন্ত্রাসী বাহিনী গিয়ে ভিসিকে চেয়ার থেকে সরিয়ে দিয়ে রাতের অন্ধকারে তাদের মতাদর্শের একজনকে বসিয়ে দিলো। শামসুন্নাহার হলে পুলিশ আর ছাত্রদল দিয়ে অত‌্যাচার চালিয়েছিলো এই খালেদা জিয়া।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলো। আমি তুলে দিয়েছিলাম বই খাতা। ছাত্ররা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই আমি ছাত্রদের হাতে বই খাতা তুলে দিয়ে বলেছিলাম, সবার মাঝে সাক্ষরতার আলো ছড়িয়ে দিতে। তারা নিজের গ্রামে গিয়ে নিরক্ষর মানুষকে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়েছিলো। বিএনপির কাজই হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করা।

আজকে বাংলাদেশের মানুষের যত অর্জন সেটি আওয়ামী লীগের হাত ধরে এসেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় এসে মার্শাল ’ল দিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিলো জিয়াউর রহমান। অর্থাৎ স্বাধীনতার চেতনা ও আদর্শে বিশ্বাস করতো না।  জংয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ, জাতির পিতার নাম নিষিদ্ধ, অর্থাৎ স্বাধীনতার ইতিহাসই কয়েকটা প্রজন্ম জানতেই পারেনি। যুদ্ধাপরাধীদের জাতির পিতার হত‌্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করেছে।

করোনা মহামারিতে জনগণের পাশে থাকার জন্য ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘টাকা লেনদেন করে নির্বাচনে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। দলটির দুই নেতা আমার কাছে এসে বলেছেন, তারা নাকি টাকা না দিলে মনোনয়ন দেয় না। টাকা না দেয়া তাদের মধ্য থেকে একজন মনোনয়ন পায়নি। ওইভাবে নির্বাচন করে নির্বাচনে জেতা যায় না। এটা হলো বাস্তবতা। সকালে একজনের নাম যায়, দুপুরে একজনের নাম যায়, বিকেলে আরেকজনের নাম যায়। এভাবেই তাদের ইলেকশন হয়। ফেলো কড়ি, মাখো তেল, অর্থাৎ যে টাকা দেবে সে প্রার্থী।’
 
সামরিক শাসক জিয়া ও এরশাদ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দখল করে ছাত্রদের সন্ত্রাসী কাজে ব্যবহার করেছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে অবৈধভাবে জন্ম হয়েছে বিএনপির। ক্যান্টনমেন্টে বসে গোয়েন্দাদের সহায়তায় এ বিএনপির জন্ম। কিছু রাজনীতি শিখেছে আমাদের সাথে যৌথ আন্দোলন করে। এরশাদবিরোধী আন্দোলন যখন আমরা করি, তখন ওই আন্দোলনের মধ্যদিয়ে তারা কিছু শিখেছে। এটাই বাস্তবতা। তাছাড়া তাদের রাজনীতি আর কী ছিল!

আমাদের কাগজ/এম টি