কাদেরের ‘হ্যাটট্রিক’, নাকি অন্য কেউ পাবে আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক
ফাইল ছবি
আমাদের কাগজ ডেস্কঃ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।দেশের মানুষের দৃষ্টি আজ থাকবে সোহরাওয়ার্দীর দিকে। এবার ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়া সংক্রান্ত ঘোষণা দেবে দলটি।
আজ(২৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করবেন।
১৯৮১ সাল থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এখনও তার বিকল্প তৈরি হয়নি বলে মনে করেন দলটির নেতাকর্মীরা। তাই নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, আবারও সভাপতির দায়িত্বে থাকছেন তিনি। তবে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে নানা ধরনের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সবার চোখ এখন দলটির এই দ্বিতীয় শীর্ষ পদের দিকেই।
অনেকেই বলছেন, দলটির সাধারণ সম্পাদক পদে চমক নিয়ে আসছেন শেখ হাসিনা। তবে কেউ কেউ বলছেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলে বড় কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তাই আবারও ওবায়দুল কাদেরই থাকছেন। যদি এটি সত্য হয়, তবে আওয়ামী লীগের ৭৩ বছরের রেকর্ড ভেঙে টানা তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হয়ে ইতিহাসে নাম লেখাবেন তিনি।
প্রথম অধিবেশন শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশন বসবে। এখানে সারা দেশ থেকে আসা সাত হাজার কাউন্সিলর অংশ নেবেন। এ অধিবেশনেই আগামী তিন বছরের জন্য দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচন হবে।
দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসছে, নাকি এই পদে রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের? আজ শনিবার দলটির ২২তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ওবায়দুল কাদেরের পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। নির্বাচিত হলে টানা তিন মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড গড়বেন তিনি। স্বাধীন বাংলাদেশে কোনো নেতাই টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হতে পারেননি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা খুবই কম। বৃহস্পতিবার রাতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা হয়েছে। সেখানে পরিবর্তনের কোনো আভাস দেননি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ফলে ব্যক্তিগতভাবে আমি সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। ’
এদিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তত এক ডজন নেতা সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী। বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সম্মেলনস্থল পরিদর্শনকালে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, অন্তত ১০ জন নেতা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী।
এদিকে দলীয় সূত্র বলছে, পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদের ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজনের নাম আলোচনায় উঠে এসেছে। তারা হলেন- সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, কাজী জাফর উল্যাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। কিন্তু সবকিছু নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর।
এদিকে বৃহস্পতিবার সম্মেলনের ভেন্যুর প্রস্তুতি দেখতে গিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সভাপতি আমাদের অপরিহার্য। যিনি সভাপতি (শেখ হাসিনা) আছেন তিনি আমাদের ঐক্যের প্রতীক। কাউন্সিলরদের একজনকেও খুঁজে পাওয়া যাবে না যে তাকে সমর্থন করবে না। কাজেই এই নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বলেন, কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা নেতা নির্বাচনের দায়িত্ব দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকেই দিয়ে থাকেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিরোধী দলগুলোর আন্দোলন- সবকিছু মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। এখন পর্যন্ত যেটা বোঝা যাচ্ছে, ওবায়দুল কাদেরই পুনরায় সাধারণ সম্পাদক পদে থাকছেন।
আমাদের কাগজ/এম টি