রাজনীতি ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১০:১৫

মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক সংকটে জনজীবন বিপর্যস্ত: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক সংকটে জনজীবন বিপর্যস্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার বিএনপির পক্ষে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেশের অর্থনৈতিক চাল-চিত্র তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদ্যুৎ-জ্বালানি-পরিবহন-খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজারের ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতিতে জনগণের ত্রাহি অবস্থা, জনজীবন বিপর্যস্ত। সামষ্টিক অর্থনীতির প্রায় সবকয়টি সূচকই আরও দুর্বল ও প্রকট হয়ে উঠেছে। এক কথায় দেশের অর্থনীতি এক মহাসংকটে নিমজ্জিত।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত আগস্টে সরকারি হিসেবে মূল্যস্ফীতি দেখানো হয়েছে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। বর্তমান মূল্যস্ফীতি কমছে দেখানো হলেও খাদ্যবর্হিভূত মূল্যস্ফীতি এখনো প্রায় দুই অঙ্কের কাছাকাছি রয়েছে। জানুয়ারি মাসে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ। জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে। অথচ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সাধারণ মূল্যস্ফীতি দেখাচ্ছে ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ আর খাদ্য মূলস্ফীতি ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এর সঠিকতা নিয়ে খোদ অর্থনীতিবিদরা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বারবার মূল্য বৃদ্ধি, আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি, দেশের রিজার্ভ তলানি নেমে আসা, নজিরবিহীন ডলার সংকট, ডলারের বিনিময়ে টাকার অভূতপূর্ব অবমূল্যায়ন, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে অব্যবস্থাপনা, অপরিনামদর্শী ভ্রান্তনীতি, লাগামহীন দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচার, ঋণ খেলাপি বৃদ্ধি পাওয়া, ঋণ প্রাপ্তির অপর্যাপ্ততা, অর্থনৈতিক আয় বৈষম্য, সুশাসনের অভাব এবং গণতন্ত্র না থাকার কারণে দেশে অর্থনৈতিক নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে।’  

তিনি বলেন, ‘আইএমএফের কাছে পাঠানো পত্রে সরকার বিরাজমান অর্থনৈতিক দুর্যোগের কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কঠিন শর্তে আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছে। বলতে গেলে তারা এখন ব্যাংক থেকে ধার করে এবং আইএমএফের ঋণের ওপর ভর করেই চলছে।’

দেশের অর্থনৈতিক সংকট সরকার কেনো স্বীকার করছে না জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের না দেখার প্রধান কারণ হচ্ছে এই সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই। এই অনির্বাচিত সরকার সবসময় মিথ্যা প্রচারণা, ভয়-ভীতি-ত্রাস সৃষ্টি, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে তারা সার্বক্ষনিকভাবে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে গোয়েলবসের মতো। যারা ফ্যাসিস্ট হয়, ডিক্টেটর হয় তাদের জন্য এই প্রচারণা জরুরি হয়। একটা মিথ্যা ধারণার মধ্যে জনগনকে রাখতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান ব্যবস্থায় লাভবান হচ্ছে এই সরকারের সঙ্গে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত ব্যবসা-বাণিজ্যে করছে এবং সো-কল্ড পলিটিশিয়ান। সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষ ভুক্তভোগীই থেকে যাচ্ছে।’

এই অবস্থায় সরকারকে কী পরামর্শ দেবেন জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকারকে সরে যেতে হবে। এই সরকার সরে গিয়ে দেশে যে ট্রাষ্ট- এটা সৃষ্টি হবে। তখন এইগুলো সমস্যা সমাধানের জন্য যোগ্য যারা ব্যক্তি কাজ করতে পারেন তাদের নিয়ে এসে সমস্যা সমাধান অত্যন্ত দ্রুত করা সম্ভব হবে।’


আমাদেরকাগজ/এইচএম