অনির্দিষ্ট কালের জন্য আসতে পারে হরতাল
নিজস্ব প্রতিবেদক: শুরু হয়েছে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল। আজ( ২৯ অক্টোবর) হরতালের সমর্থনে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা রাজধানীর উত্তরা, গুলশান, তুরাগ, পল্লবী থানা এলাকায় মিছিল ও পিকেটিং করেছে। তবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অবস্থান কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তাহলে নতুন কোন দুঃশ্চিন্তা বয়ে আনবে কিনা বিএনপি, সে-ই আশঙ্কা কিন্তু রয়েই যাচ্ছে।
এদিকে নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয় ঘিরে আছে পুলিশের সর্তক অবস্থান।
রাজধানীর নয়াপল্টনে পূর্ব ঘোষিত সমাবেশ থেকে (রোববার) (২৯ অক্টোবর) সারাদেশে হরতাল পালনের ঘোষণা দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
হরতাল ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের তাণ্ডব। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, পুলিশ হাসপাতালে হামলাও চালায় তারা। (রবিবার) (২৯ অক্টোবর) সকাল থেকে রাজধানীতে তেমন প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। এর আগে (শনিবার) (২৮ অক্টোবর) দলীয় কার্যালয়ের সামনে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে মহাসমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। তাদের ‘শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের যৌথ হামলা চালিয়েছে’ অভিযোগ এনে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।
এদিকে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। (রোববার) (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে আটক করা হয়। এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বাসা ঘেরাও করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাভার পরিবহনের এক বাস চালক বলেন, ‘হরতাল চলছে। এর মধ্যে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। কামাই না থাকরে কাল খাব কি! যা হবে, পরে দেখা যাবে।’
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন দেখা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ছিল রাস্তায়। পুলিশ সদর দফতরের মিডিয়া অ্যান্ড পিআর শাখার এআইজির দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর জানিয়েছেন, চলাচলের ক্ষেত্রে কোনোধরনের বাধার সম্মুখীন হলে বা আইনি সহায়তার প্রয়োজন হলে নিকটস্থ পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলা হচ্ছে। পুলিশ জনগণকে সবধরনের নিরাপত্তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জনগণের জানমাল ও সরকারি সম্পত্তি নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের আইনি দায়িত্ব।
নাম না প্রকাশে এক বিএনপি নেতা বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া প্রযর্ন্ত আমরা এক চুল পরিমান নড়ব না।
বিএনপির আরেক নেতা বলেন, যেহেতু আমাদের দলের মহাসচিবসহ অসংখ্য নেতা কর্মী আটক করা হয়েছে। সেহেতু দল থেকে যেকোন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
এর আগে, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে শনিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করছিল বিএনপি। সমাবেশ শুরু হওয়ার এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে দলটির নেতাকর্মীরা। এতে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ায় রোববার (২৯ অক্টোবর) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় বিএনপি।
বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতালে প্রায় প্রতিটি সড়কেই সবধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হিসেবে অন্যান্য দিনের তুলনায় ভোর থেকে যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা কম, যদিও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যান চলাচল কিছুটা বাড়ছে।
এদিকে ভোরের দিকে রাজধানীর ডেমরায় পার্কি করে রাখা একটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অসিম পরিবহনের ওই বাসে ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা মো. নাঈম (২২) নামে এক শ্রমিক মারা গেছেন। দগ্ধ হয়েছে আরও একজন।
কাজের সন্ধানে বের হওয়া কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের অনেকেই হরতালের বিষয়ে জানেন, কেউ আবার আত্মীয় স্বজনের কাছে শুনেছেন। তবে জীবিকার তাগিদেই বাইরে এসেছেন তারা।
আমাদের কাগজ/এমটি