সারাদেশ ২১ নভেম্বর, ২০২৩ ০১:৫৭

বাসে আগুন লাগিয়ে তৈরি ভিডিও পাঠাতেন দলের শীর্ষ নেতাদের

আমাদের কাগজ ডেস্ক: বেশ কিছুদিন ধরে হরতাল -অবরোধ যেন মানুষের শান্তির ঘুম নষ্টের মূল কারণ হতে বসেছে। রাত পোহালেই আগুন- হরতাল,অবরোধ। যা সাধারণ মানুষকে আরও আতঙ্কে রেখেছে। আর এরই মাঝে বিরোধী রাজনৈতিক দলের চার কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানী মিরপুরে বাসে আগুন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে জানায় র‍্যাব।

শুধু তাই নয়, গ্রেপ্তার কৃতরা বাসে আগুন দেওয়ার পর সেটি ভিডিও করে হোয়াটসঅ্যাপে দলের শীর্ষ নেতাদের পাঠিয়ে দিত।

আজ মঙ্গলবার ২১ নভেম্বর, দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান  লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এর আগে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় একটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের চার কর্মীকে গ্রেপ্তার দেখায় র‍্যাব। 

গ্রেপ্তার চারজন হলেন- আল মোহাম্মদ চাঁন (২৭), মো. সাগর (২৫), মো. আল আমিন ওরফে রুবেল (২৯) ও মো. খোরশেদ আলম (৩৪)। সোমবার (২০ নভেম্বর) রাতে র‍্যাব-৪ এর একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার চারজন একটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মী বলে জানায় র‌্যাব।

র‍্যাব জানায়, দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নিদের্শনায় গ্রেপ্তার আল মোহাম্মদ চাঁন রাজধানীর মিরপুর ও পল্লবীর আশপাশের এলাকায় বাসে আগুন দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। বাসে আগুন দেওয়ার জন্য চাঁন প্রত্যেকের জন্য ১০ হাজার টাকা করে পেলেও সাগর ও আল আমিনকে ৭ হাজার টাকা করে দেন। চাঁন বাসে আগুন দেওয়ার জন্য গত ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় তার বন্ধুর মোটরসাইকেল থেকে ২৫০ মিলিগ্রাম পরিমাণ পেট্রোল বের করে এনার্জি ড্রিংকের বোতলে ভরে আল আমিনের কাছে দেন। রাত ১১টার দিকে তারা বাসে অগ্নিসংযোগ করার জন্য রাজধানীর কালশী সড়ক রেকি করেন। এসময় কালশী সড়কে মসজিদের পাশে পার্ক করা বসুমতি পরিবহনের একটি বাস সুবিধাজনক হওয়ায় চাঁনের নির্দেশে সাগর ও আল আমিন বাসের কাছে যান এবং জানালা খুলে পেট্রোল ঢেলে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন।

র‍্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চাঁন রাস্তার আইল্যান্ডের ওপরে দাঁড়িয়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের নির্দেশনা প্রদান ও ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। অন্য কোনো বিরোধীদলের সদস্য যাতে এ ঘটনার ছবি তুলে ও ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রেরণ করে কৃতিত্ব নিতে না পারে সেজন্য চাঁন বাসে আগুন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খোরশেদকে ঘটনাস্থল থেকে ভিডিও ধারণ করে তাৎক্ষণিকভাবে পাঠাতে বলেন। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, তারা মূলত দলের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি ও দলের প্রতি নিজেদের আস্থার প্রতিদান দিতে তারা এসব নাশকতার ভিডিও ধারণ করে শীর্ষ নেতাদের কাছে প্রেরণ করতেন।

এছাড়া গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টনে বিরোধী একটি দলের মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করে পল্টন এলাকাসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গণপরিবহন, ব্যক্তিগত পরিবহন, সরকারি পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ নাশকতা ও সহিংসতার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন এই চারজন।

১৯ ও ২০ নভেম্বর টানা দুদিনের হরতাল কর্মসূচির পর একদিন বিরতিতে আবারো টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। একই কর্মসূচি দিয়েছে আরেক রাজনৈতিক দল বিএনপি।

আমাদেরকাগজ/এমটি