জেলা প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) সামগ্রিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ, শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, ভয়ভীতি প্রদর্শন, পাঠদান কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের (নিষিদ্ধঘোষিত) ১৯ জন নেতাকর্মীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে ৪ জনকে আজীবনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া, ১ জনকে ৫ সেমিস্টার, ৭ জনকে ৪ সেমিস্টার ও ৭ জনকে ৩ সেমিস্টার মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গত ২৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত ২৫০তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটি ছিল সভার ৪ নম্বর আলোচ্যসূচি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় ৪ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাকি ১৫ জনকে তাদের অপরাধের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে এবং বহিষ্কার আদেশ কার্যকর থাকাকালীন তাদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, একটি বিশেষ ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ২৪৭তম (জরুরি) রিজেন্ট বোর্ড সভায় ১৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয় এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ২৪৮তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় পুনর্গঠিত তদন্ত কমিটির দাখিলকৃত চূড়ান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ১৯ জন শিক্ষার্থীকে দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আজীবনের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন ইএসআরএম বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সভাপতি মানিক শীল, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাওন ঘোষ ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সাদিক ইকবাল।
এছাড়াও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রায়হান আহমেদ শান্তকে ৫ সেমিস্টারে জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
চার সেমিস্টারে জন্য ৭ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছেন রসায়ন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. যোবায়ের দৌলা (রিয়ন) ও রানা বাপ্পি। গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সাখাওয়াত আহমেদ শুভ্র এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মো. আব্দুল্লাহ সরকার উৎস ও মো. আবিদ হাসান (মারুফ)। অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের খালেকুজ্জামান নোমান। ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের নাহিদ হাসান।
তিন সেমিস্টারের জন্য ৭ বহিষ্কৃতরা হলেন- অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুজন মিয়া ও একই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মো. নাঈম রেজা, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের জাহিদ হাসান, সিপিএস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইমতিয়াজ আহমেদ রাজু ও ইমরানুল ইসলাম। হিসাববিজ্ঞান ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মো. রিফাত হোসেন এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মো. আনোয়ার হোসেন (অন্তর)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ডের অনুমোদনে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।






















