সারাদেশ ১৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০৬:১৯

র‌্যাব-পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি

ডেস্ক রিপোর্ট।।

নতুন এ চক্রটি টার্গেট করা ব্যক্তিকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখানো ছাড়া ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়।

কখনও র‌্যাব, কখনও পুলিশ পরিচয়ে করা হয় ছিনতাই-ডাকাতি। টার্গেট ব্যাংকপাড়া। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে মারধর ছাড়াও ভয়ভীতি দেখানো এবং দেয়া হয় ক্রসফায়ারের হুমকি। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ খোঁজ পেয়েছে এরকম একটি চক্রের।

ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন কয়েকজন। যাদের টার্গেট ব্যাংকের বড় গ্রাহক। যারা নগদ টাকা তুলে থাকেন। টার্গেট করা ব্যক্তি ব্যাংক থেকে বের হওয়ার পর তারা গাড়ি নম্বর, গাড়ির রংসহ বিস্তারিত তথ্য পাঠায় অপেক্ষমান অন্য সহযোগিদের কাছে। কিছু দূর যাওয়ার পর ব্যরিকেড দেয়া হয় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে আনা ওই ব্যক্তিকে। ডাকাতেরা ওই সময় নিজেদের পরিচয় দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হিসেবে।

এরকমই একটি ঘটনা ধরা পড়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায়। আকাশ পরিবহণের একটি বাসে করে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফিরছিলেন এক ব্যক্তি।

ডাকাত দল ছিল মাইক্রোবাসে। অনুসরণ শেষে সুবিধামতো জায়গায় দেয়া হয় ব্যারিকেড। মাইক্রোবাস থেকে বের হন তিনজন। নিজেদের র‌্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে তুলে নেয়া হয় ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ফেরা ওই ব্যক্তিকে। যার তথ্য তারা ব্যাংক থেকে বের হওয়ার সময় নিয়েছিল। এরপর, তোলা হয় মাইক্রোবাসে। ছিনিয়ে নেয়া হয় সব টাকা।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ধরে অনুসন্ধানে নামে গোয়েন্দা পুলিশ। অভিযান চালাতে গেলে চক্রের দু'জন নিহত হন বন্দুকযুদ্ধে। আটক হন আরও দু'জন।

এই ডাকাত দলের এক সদস্য জানান, গাড়িতে উঠে টার্গেট করা ব্যক্তিকে পরিচয় দেয়া হয় র‌্যাব বা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য হিসেবে। এরপর ওই ব্যক্তিকে বলা হয় আপনার নামে মামলা আছে। অথবা সঙ্গে জাল টাকা থাকার অভিযোগ তোলা হয়। তারপর, সঙ্গে করে নামিয়ে নেয়া হয় টার্গেট করা ব্যক্তিকে। এমনকি গাড়িতে উঠানোর পর হাতে লাগানো হয় হাতকড়া। এছাড়া, ক্রসফায়ারের ভয়ভীতিও দেখানো হয়।'

পুলিশ বলছে, হুণ্ডি ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে টার্গেট করে তারা।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর বিভাগ) উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, 'হুন্ডি ব্যবসায়ীরা সাধারণত ডাকাতির কবলে পড়লে মামলা-মোকদ্দমায় জড়াতে চায় না। আর অপরাধীরা সাধারণত এদেরকেই টার্গেট করে।' তবে, এর সঙ্গে সাধারণ মানুষদেরও টার্গেট করে বলেও জানান মশিউর রহমান।

এছাড়া সাধারণভাবে ডাকাতি করতে গেলে গণপিটুনি বা ধরা পড়ার ভয় থাকে। কিন্তু, হাতে ওয়্যারলেস, হ্যান্ডকাপ বা বিশেষ কোনো বাহিনীর কোটি থাকলে ধরা পড়ার ভয় যেমন কম থাকে। আর এগুলো তারা বিভিন্ন স্থান থেকে বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।

পুলিশের ধারণা এরকম আরও অনেক চক্র থাকতে পারে।