আন্তর্জাতিক ১৭ নভেম্বর, ২০২২ ০৪:০২

যে কারণে ১০ হাজারমানুষের মগজ চুরি করেছেন চিকিৎসকেরা

ছবি:ইন্টারনেট

ছবি:ইন্টারনেট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রতি ডেনমার্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিএনএন যার নাম প্রকাশ করেনি) ক্যাম্পাসের ভূগর্ভস্থ জায়গা থেকে বেশ কিছু মস্তিষ্ক উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে একটি গোপন গুদামে মস্তিষ্কগুলো বাক্সবন্দী করে রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এক তথ্যচিত্রে এ বিষয়টি তুলে ধরেছে।

বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর অভিযোগ উঠেছে, ডেনমার্কের একদল চিকিৎসক অন্তত ১০ হাজার মানসিক রোগীর মাথা থেকে মস্তিষ্ক সরিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু তাদের পরিবারের কাছ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি নেননি তাঁরা।

গত ১২-১৩ নভেম্বর সিএনএনে প্রচারিত তথ্যচিত্রে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে প্রায় ৩৭ বছর ধরে ডেনমার্কের চিকিৎসকেরা মস্তিষ্ক সংগ্রহের এ কাজ করতেন। মূলত সিজোফ্রেনিয়া ও নানা ধরনের মানসিক রোগে ভোগা ব্যক্তিদের মৃত্যুর পর তাদের মস্তিষ্ক সরিয়ে নিতেন তাঁরা। কিন্তু তাঁরা বিষয়টি পরিবারের লোকজনকে ঘুণাক্ষরেও জানাতেন না।

সিএনএন বলেছে, সেই সময়ে সিজোফ্রেনিয়া সম্পর্কে যেহেতু চিকিৎসকেরা তেমন কিছুই জানতেন না, তাই এরিক স্টর্মগ্রেন ও লারুস আইনারসন নামের দুই চিকিৎসক গোপনে মস্তিষ্ক হাতানোর পরিকল্পনা করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। মরদেহের ময়নাতদন্তের সময় তাঁরা মস্তিষ্ক সরিয়ে ফেলতেন। এরপর গোপন বাক্সে বন্দী করে ফেলতেন। সিএনএন বলেছে, গবেষণার উদ্দেশ্যে না কি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে তাঁরা এ কাজ করতেন, তা জানা যায়নি।

২০১৮ সালে অর্থাভাবে সংগ্রহশালাটি অন্য একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, সিএনএনের প্রতিবেদনে তা বলা হয়নি। সেই সময়ে ইনস্টিটিউট অফ ব্রেন প্যাথোলজির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিলেন মার্টিন ডব্লিউ নিয়েলসন। তিনি ‘ব্রেন কালেক্টর’ নামে পরিচিত।

সিএনএন বলেছে, মস্তিষ্কগুলো অক্ষত রাখার জন্য ফর্মালডিহাইডে ডুবিয়ে রাখা হতো। প্রতিটি পাত্রের গায়ে নম্বর লিখে রাখা হতো, যাতে কার মস্তিষ্ক কোনটি, তা শনাক্ত করা যায়। এভাবেই জানা গেছে উদ্ধার হওয়া মস্তিষ্কগুলো কোন কোন রোগীর। তবে ১ নম্বর মস্তিষ্কটি কার, তা এখনো জানতে পারেননি চিকিৎসকেরা।

নাম প্রকাশ না করা ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৯ হাজার ৪৭৬টি পাত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে সিএনএন জানিয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৫ হাজার ডিমেনশিয়া রোগীর মস্তিষ্ক ছিল। বাকিগুলো অন্যান্য রোগীর।

১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল কারস্টেন আবিলট্রাপ নামের এক শিশু। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল নেদারল্যান্ডসের একটি মানসিক হাসপাতালে। সেই শিশুর মৃত্যুর পর চিকিৎসকেরা তার মস্তিষ্ক সরিয়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ডেনমার্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওই শিশুর মস্তিষ্ক উদ্ধার করা হয়েছে।

 

 আমাদের কাগজ//টিএ