আন্তর্জাতিক ২২ নভেম্বর, ২০২২ ০৩:৪৯

মালয়েশিয়ার সরকার গঠন নিয়ে যা বললো দেশটির রাজা

ছবি:ইন্টারনেট

ছবি:ইন্টারনেট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নির্বাচনের পর মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতির জটিলতা আরও বেড়েছে। সরকার গঠনে প্রধান তিন দলের কোনোটিই প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। ফলে দুদিন আগে নির্বাচনের ফল প্রকাশ হলেও এখনও পর্যন্ত সরকার গঠিত হয়নি দেশটিতে। নির্বাচন পরবর্তী এই রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটিয়ে উঠতে আজ মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুর ২টার মধ্যে নতুন সরকার গঠনের জন্য দলগুলোকে জোট গঠনের আদেশ দিয়েছেন মালয়েশিয়ার রাজা আল-সুলতান আবদুল্লাহ রিয়াতউদ্দিন। 

মালয়েশিয়ার বার্তাসংস্থা বেরনামা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের ব্যাপারে ন্যাশনাল প্যালেসের বাইরে উপস্থিত সাংবাদিকদের রাজা আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘আমাকে দ্রুত এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে দিন। আমার সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

এদিকে, ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের মুহিউদ্দিন ইয়াসিন এবং পাকাতান হারাপানের আনোয়ার ইব্রাহিম নির্বাচনে অংশ নেওয়া ছোট ছোট দলগুলোর সমর্থনের জন্য ছুটছেন। সোমবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মুহিউদ্দিন ইয়াসিন জানান, সরকার গঠনে তিনি ১১২ জনেরও বেশি আইনপ্রণেতার নাম ইতোমধ্যেই রাজার কাছে জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে, আনোয়ার ইব্রাহিমও ন্যাশনাল ফ্রন্টের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। আজ দুপুর ২টার মধ্যেই আইনপ্রণেতাদের নাম জমা দিতে হবে রাজপ্রাসাদে।

এর আগে অবশ্য রাজপ্রাসাদের বিবৃতিতে স্থানীয় সময় গতকাল (২১ নভেম্বর) দুপুর ২টা পর্যন্ত জোট গঠনের সময় দেওয়া হয়েছিল। পরে তা ২৪ ঘণ্টা বাড়িয়ে আজ দুপুর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।মালয়েশিয়ার সংবিধান অনুযায়ী, সরকার গঠন করতে ২২২টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ন্যূন্যতম ১১২ টি আসনে জয়ী হতে হবে যেকোনো রাজনৈতিক দলকে। তবে, এবারের নির্বাচনে কোনো দলই এ শর্ত পূরণ করতে পারেনি। 

অন্যদিকে, মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাহাথির মোহাম্মদ ১৯৬৯ সালের পর প্রথমবারের মতো নিজের সংসদীয় আসন হারিয়েছেন। সংসদের একটি আসনেও জিততে না পারায় নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে তার দলের। এমনকি, নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জামানতও হারিয়েছেন তিনি। 

নিয়ম অনুযায়ী, জামানত রক্ষা করতে মোট ভোটের ২০ শতাংশ পেতে হয়। কিন্তু মাহাথিরের দল পেয়েছে মাত্র ৬ শতাংশের কিছু বেশি। ফলে শেষরক্ষা হয়নি তার দলের। নির্বাচনের আগে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাহাথির বলেছিলেন, লংকাউয়ির সংসদীয় আসন হারালে রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর নেবেন তিনি। ফলে অনেকেই ধারণা করছেন, এই নির্বাচনের সঙ্গেই বোধয় বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটলো। 

মালয়েশিয়ার ক্ষমতাসীন জোটের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে চলতি বছরের অক্টোবরের শুরুতে সংসদ ভেঙে দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকুব। চলমান রাজনৈতিক সংকটে স্থিতিশীলতা আনতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ফলে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও সংসদ ভেঙে দেওয়ায় শনিবার দেশটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আগাম নির্বাচন। আশা ছিল, নতুনভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে। তবে কোনো একক দলই প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে না পারায় ফের অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে।

 

আমাদের কাগজ//টিএ