আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দিল্লিতে বেশ কিছুদিন ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন কুস্তিগিররা। বুধবার (৩ মে) স্থানীয় সময় রাতে তাদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। এ সময় কুস্তিগিরদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার বৃষ্টির মধ্যেই মাটিতে কাঠের তক্তায় গদি পেতে শুয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন কুস্তিগিররা। বৃষ্টির পানিতে গদি ভিজে গেলে তারা ফোল্ডিং খাট আনান। সেই খাট বিক্ষোভস্থলে আনার সময় পুলিশ বাধা দেয়। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।
অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের আক্রমণে বেশ কয়েকজন কুস্তিগির মাথায় আঘাত পান। একজন অজ্ঞান হয়ে যান। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
পুলিশের ভাষ্য, আপ নেতা সোমনাথ ভারতী ঘটনাস্থলে ফোল্ডিং খাট নিয়ে যান। কিন্তু এই খাট নিয়ে আসার কোনো অনুমতি তার ছিল না। তাই তাকে বাধা দেওয়া হয়। তারপর ছোটখাটো ঝামেলা হয়।
কুস্তিগিরদের অভিযোগ, পুলিশের কয়েকজন মদ্যপ সদস্য নারী কুস্তিগির বিনেশ ফোগতের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছে। বিনেশ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় মেডেলজয়ী।
কমনওয়েলথ গেমসে স্বর্ণ পাওয়া কুস্তিগির গীতা ফোগত জানিয়েছেন, তার ভাই দুষ্মন্ত ফোগতের মাথায় আঘাত লেগেছে।
বিনেশ ফোগত কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “আমরা কি অপরাধী? যদি আমাদের মারতে চাও তো মেরে ফেল।”
অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক পাওয়া বজরং পুনিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “সরকার আমাদের কাছ থেকে সব মেডেল নিয়ে নিক।”
৪ মে সকাল থেকে পুরো এলাকা পুলিশ ঘিরে রেখেছে। সাংবাদিকদেরও সেখানে যেতে দিচ্ছে না। কংগ্রেস নেতা দীপিন্দর সিং হুডা রাতে ঘটনাস্থলে গেলে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
কুস্তিগিরদের অভিযোগ, ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং নারী কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্তা করেছেন। তাকে শাস্তি দিয়ে ফেডারেশনের পদ থেকে সরাতে হবে।
এর আগেও একই দাবিতে ভারতীয় কুস্তিগিররা জয়পুরের যন্তর মন্তর স্মৃতিস্তম্ভে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। সেবার ঘটনার তদন্তে দেশটির সরকার একটি কমিটি করে দিলে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন কুস্তিগিররা।
এবার তাদের অভিযোগ, কমিটি গঠনের পরেও কিছু হয়নি। তারা পুলিশকে জানিয়েছেন। পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ শরণ সিং একজন বিজেপি সাংসদ এবং উত্তরপ্রদেশের প্রভাবশালী নেতা।
এদিকে দিল্লির মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান স্বাতী মালিওয়াল জানান, তিনি রাতে ঘটনাস্থলে গেলেও তাকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাকে টেনে-হিঁচড়ে গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়।
স্বাতী জানিয়েছেন, সকালে তিনি আবার ঘটনাস্থলে যান। তখনও ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। অনেক বাগ্বিতণ্ডার পর তিনি এসেছেন।
তার প্রশ্ন, “দিল্লি পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না? কেন তারা কাউকে এখানে ঢুকতে দেবে না? কেন তারা দিল্লির মহিলা কমিশনের কাজেও বাধা দিচ্ছে? কোন আইনে তারা এই কাজ করতে পারে?”
আমাদের কাগজ/টিআর



















