অপরাধ ও দুর্নীতি ২০ নভেম্বর, ২০২০ ১০:০১

ধর্ষণ-হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি যুবক, সিসিটিভি ফুটেজে পাশবিকতা

নিরাপত্তারক্ষী মোহন

নিরাপত্তারক্ষী মোহন

নিজস্ব প্রতিবেদক

সকালে ঘুম থেকে উঠেই ছাদবাগানে পানি দিতে গিয়েছিল ১৫ বছর বয়সের এক তরুণী। ছাদে যাওয়াই সেই তরুণীর জীবনটাকে আঁধারে বিলীন করে দিলো। বাসার নিরাপত্তারক্ষী মোহন সুযোগ বুঝে মেয়েটিকে ছাদে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে গলায় থাকা ওড়না পেঁচিয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে এতেও ক্ষান্ত হয়নি সেই যুবক। মেয়েটির লাশ সাততলার ছাদ থেকে নীচে ফেলে দেয়। আর এমন হৃদয় বিদারক দৃশ্যটি পাশের একটি ভবনের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় (সিসিটিভি) ধারণ হয়

গত নভেম্বর রাজধানীর দক্ষিণখান থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম মোহন (২০) সে বাড়িটির নিরাপত্তারক্ষী দায়িত্বে ছিল। আর মেয়েটি ছিল ওই বাসার গৃহকর্মী ধর্ষণের পর হত্যা করার অভিযোগে মোহনকে আসামি করে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের () ধারায় মামলা করেন মেয়েটির বাবা

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজিয়া খাতুন বলেন, মেয়েটি ধর্ষণের কথা সবাইকে বলে দেবে, এই ভয়ে মোহন মেয়েটির গলায় থাকা ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে তাঁকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন। মেয়েটিকে ধর্ষণ করা এবং সাত তলার ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ধরা পড়েছে পাশের একটি ভবনের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় (সিসিটিভি)

এসআই রেজিয়া খাতুন আরও জানান, যত দ্রুত সম্ভব এই হত্যা মামলায় আদালতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে

মেয়েটির পরিবার পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এবং মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, দুই বছর ধরে মেয়েটি দক্ষিণখান এলাকার ওই বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছিল। তার বাবা ইটভাটার শ্রমিক। তারা পাঁচ ভাইবোন। খুন হওয়ার দুদিন আগেও মেয়েটি তার বাবার সঙ্গে কথা বলেছিল মেয়েটি সেদিন ঘুম থেকে উঠে ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে ছাদে যায় ছাদবাগানে পানি দেওয়ার জন্য। প্রায় প্রতিদিনই মেয়েটি ছাদবাগানে পানি দিত।

সেদিন ভোরে ছাদে পানি দেওয়ার জন্য যায় সে। আধঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরও মেয়েটি যখন বাসায় ফেরে না, তখন তাঁরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কোথাও তাঁকে খুঁজে পাচ্ছিল না। ঘণ্টা দুয়েক পর বাসার এক মিস্ত্রী বাসার পাশের কচুরিপানার মধ্যে লাশটি দেখতে পান। সেখানে গিয়ে তাঁরা নিশ্চিত হন, লাশটি তাঁদের গৃহকর্মীর। তখন পুলিশকে খবর দেওয়া হয়

বাসার গৃহকর্ত্রী বলেন, আমরা কল্পনাও করতে পারিনি, আমার বাসার কাজের মেয়েকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করা হবে।

ওই মেয়ের মৃত্যুর পর তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মেয়েটির বাবা বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমার পাঁচ সন্তান। অনেক কষ্ট করে ওদের মানুষ করেছিলাম। কিন্তু কেমনি কী হয়ে গেল? আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে মেরে ফেলল। আমি মোহনের ফাঁসি চাই।