অপরাধ ও দুর্নীতি ১৩ অক্টোবর, ২০২০ ০৪:২৯

রাজধানীতে সিন্ডিকেটের ছোবলে জ্বলছে অবৈধ গ্যাসের চুলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর কড়াইল বস্তির প্রায় প্রতিটি বাড়ির গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বলছে। অথচ কিছুদিন আগেই সকল অবৈধ গ্যাসের লাইন কাটা পরেছিল সেখানে। বস্তিবাসীরা বলছেন,অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ন্ত্রণ হয় কিছু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। যেখান থেকে প্রতি মাসে প্রায় কোটি টাকা লেনদেন হয়।

রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে প্রায় ৪০ হাজার ঘরে কয়েক লাখ মানুষের বসবাস। সরকারি জায়গা হলেও প্রতিটি পরিবারকে ঘরভাড়াসহ গ্যাস বিদ্যুতের টাকা দিয়ে থাকতে হয় বস্তিতে। বস্তিটি নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। এই নেতারাই প্রতি মাসে গ্যাসের জন্য প্রতিটি ঘর থেকে এক চুলার জন্য ৭০০ দুই চুলার জন্য ১৪০০ টাকা নিয়ে থাকেন।

নাম প্রকাশ না করে বস্তির এক বাসিন্দা বলেন, সরকারি জায়গায় থাকি যে যেভাবে বলে তেমনভাবে চলি। এক চুলা ৭০০ টাকা, দুই চুলা ১৪০০ টাকা করে দিই। যাদের লাইন তারা প্রতি মাসে এসে টাকা নিয়ে যায়। টাকা দিলে গ্যাস থাকে, না দিলে গ্যাস থাকে না।

বস্তিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মমিন, মনির, মঞ্জু, কামাল শিপন- এই সিন্ডিকেটটি নিয়ন্ত্রণ করে। তারা গ্যাস বাবদই প্রতি মাসে আদায় করে প্রায় ৫০ লাখ টাকা।

মমিনের বাসায় যাওয়ার পর বাড়ির সদস্যরা জানালেন, তিনি এখানে থাকেন না। তার ভয়ে কেউ ক্যামেরায় কথা বলতে রাজি হননি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেবল বস্তিঘর নয় এই বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আছে বস্তির প্রতিটি হোটেলও। অবৈধ লাইন বন্ধের পরও প্রতিটি হোটেলের চুলায় আগুন জ্বলছে। যেখানে চুলাভেদে প্রতিদিন আদায় করা হয় এক থেকে দুইশ টাকা। বস্তির দোকানের কর্মচারীরা বলেন, যারা গ্যাসের লাইন দেয় তাদের কাছ থেকে মালিক আনছে। তারা প্রতিদিন ১০০ টাকা করে নেয়।

তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী মো. আল মামুন বলেন, অবৈধ সব সংযোগের তালিকা হচ্ছে। আমরা যেহেতু গ্যাসের অবৈধ সংযোগের কাজটি হাতে নিয়েছি, নিশ্চিত থাকেন যতক্ষণ না শেষ হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত অভিযান চলবে।

অবৈধ সংযোগের ব্যাপারে যাদের নাম আসবে, গ্যাস আইনের আওতায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এছাড়া, তিতাসের কোনো কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।