শিক্ষা ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০৬:৩৮

ডাকসু থেকে রাব্বানীর অব্যাহতি ও পুনঃনির্বাচনের দাবি প্রগতিশীল জোটের

ডেস্ক রিপোর্ট ।। 

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর পদচ্যুতির পর এ দুজন নেতার বিচারের দাবি উঠেছে।  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে একটি সামাজিক যোগাগোগ মাধ্যমে অডিও ফাঁস হয়েছে। সদ্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ হারানো গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হামজা রহমান অন্তর এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইনের এই ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ইমেজ সংকটে পড়েছে ছাত্রলীগ।

এর প্রেক্ষিতে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেলের আমন্ত্রণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধারাবাহিকতায় ঘটে যাওয়া দুর্নীতি ও জালিয়াতির মতাে
পরস্পর যুক্ত ঘটনা গুলো বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাস কলঙ্ক যুক্ত করেছে বলে মনে করেন নোবেল। তিনি জানান,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা সমূহের সূত্রপাত সেই জালিয়াতি করে ডাকসু নির্বাচনের সময় থেকে। প্রগতিশীল ছাত্র জোট তখনি এই নির্বাচনের পরিণাম সম্বন্ধে সবাইকে সচেতন করার চেষ্টা করেছে বলে তিনি জানান। 

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আরো জানান, সাম্প্রতিক সময়ে রােকেয়া হলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়োগ দুনীতিতে হল প্রশাসন ও হল সংসদের ভিপি-জিএসের বিরুদ্ধে ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। টাকার লেনদেন নিয়ে হল সংসদের এজিএসের সাথে হলের এক কর্মচারীর ফোনালাপের অডিও ফাঁস হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই দুর্নীতি
সম্পর্কে অবগত হয় এবং ঐদিন থেকেই এই নিয়োগ বাণিজ্যের সাথে জড়িত হলের প্রাধ্যক্ষ ও হল সংসদের ভিপি-জিএসের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে হল সংসদ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কিন্তু এই কমিটি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো অভিযােগকারী শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে হেনস্তা করে।

রােকেয়া হলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চলাকালীন সময় জানা যায় ডাকসু ও বিভিন্ন হল সংসদের ৩৪ জন প্রার্থীকে কোন প্রকার ভর্তি পরীক্ষা না নিয়ে নিয়ম-বহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের ব্যাংকিং ও ইলুরেন্স বিভাগের মাস্টার্স অব ট্যাক্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তির কথা। এদের মধ্যে ৭ জন ডাকসু এবং বাকীরা বিভিন্ন হল সংসদে নির্বাচিত। জানা যায় উপাচার্যের বিশেষ চিরকুটের মাধ্যমে এদেরকে ভর্তির অনুমতি দিয়েছেন বাণিজ্য অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম।

মেহেদী হাসান নোবেল আরো বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান অপরিকল্পিত মাস্টারপ্লান ও একনেকে অনুমােদিত চৌদ্দশত পঁয়তাল্লিশ (১৪৪৫) কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মেগা প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই টেন্ডার ছিনিতাই এবং পরবর্তিতে কাজ শুরু হওয়ার অল্প কয়েকদিনের মাথায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং বিদ্রোহী অংশের নেতাদের মধ্যে টাকা ভাগাভাগির তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পয় "দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর" ব্যানারে গড়ে উঠা আন্দোলনে শুরু হয়। চলমান এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। 

গত কয়েকদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলো বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসকে কলঙ্ক যুক্ত করেছে। এর ফলে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এসকল ঘটনার সাথে যারা দায়ী তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, ডিন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী যেই হােক না কেন তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে আরো বলতে চাই দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে নিজ সংগঠন থেকে অব্যাহতি পাওয়া কোন ব্যাক্তি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্ত্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ডাকসুর কোন পদে আর থাকতে পারেন না। বর্তমান বাস্তবতায় দাড়িয়ে ডাকসুর অতীত ঐতিহ্য সম্মুনত রাখার জন্য অবিলম্বে এই ডাকসু অবৈধ ঘোষণা করে পূনঃনির্বাচনের দাবী জানায় ছাত্র ইউনিয়ন।