শিক্ষা ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১০:২৮

২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম 

ঢাবিতে ‘লাল সন্ত্রাসী’ মেঘমল্লার বসুকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
ফেসবুক পোস্টে প্রকাশ্যে ‘লাল সন্ত্রাস’ ঘোষণা দেওয়া ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মেঘমল্লার বসুকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা মেঘমল্লার বসুকে ‘লাল সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে শতাধিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সমাবেশে মিলিত হন।

সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা সেন্ট্রাল লাইব্রেরি এলাকায় সিরাজ সিকদারের গ্রাফিতিতে জুতা নিক্ষেপ করেন এবং গ্রাফিতি মুছে ফেলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা- ‘লাল সন্ত্রাসের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’; ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট একশান’; ‘লাল সন্ত্রাসের/শাহবাগীদের/ গাজাখোরদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশান’; ‘লাল সন্ত্রাসের চামড়া, তুলে নেবো আমরা’; ‘লাল সন্ত্রাসের ঠিকানা, এ ক্যাম্পাসে হবে না’; ‘উদ্যানের গাঁজাখোর, উদ্যানে ফিরে যা’; ‘মেঘমল্লারের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’; ‘হৈ হৈ রৈরৈ  মেঘমল্লার গেলি কই’; ‘জঙ্গি বসুর ঠিকানা এ ক্যাম্পাসে হবে না’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। 

বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, দেশে যখনই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয় খেয়াল করলে দেখবেন তার পেছনে এই লাল সন্ত্রাসীদের হাত রয়েছে। তারা যুগ যুগ ধরে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়েছে এবং দিবালোকে মানুষকে হত্যা করেছে। তারা সেই লাল সন্ত্রাসকে পুনরায় কায়েম করতে চায়। এখন ডাকসু হলে ২টা ভোটও পাবে না, তাই আজকে তারা এমন সন্ত্রাস কায়েমের চেষ্টা করছে। যার ফলশ্রুতিতে তারা সেন্ট্রাল লাইব্রেরির পাশের দেওয়ালে শিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি এঁকেছে। কেউ যদি এমন সন্ত্রাসের চেষ্টা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের বিষদাঁত ভেঙে ফেলবে। 

এ বি জোবায়ের বলেন, এনসিটিবির ঘটনার পর একটা গ্রুপ অপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেদিন যাদের মদদে হামলা হয়েছে তারাই আজকে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়েছে। আজকে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা প্রকাশ্যে জঙ্গিবাদের ঘোষণা। যারা লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়ে দেশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি খারাপ করতে চাচ্ছে তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। 

সূর্যসেন হলের শিক্ষার্থী আজিজুল হক বলেন, এই বামেরা গত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের বি টিম হিসেবে কাজ করেছে। ছাত্রদল, শিবিরের ওপর হামলা করেছে। আপনারা কি এই লাল সন্ত্রাসীদের আবার সুযোগ দিবেন? আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা এমন সন্ত্রাসীদের পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেবো না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই সন্ত্রাসীদের কখনো সুযোগ দেবে না। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, বিগত বছরগুলোতে ছাত্রলীগ তাদের অনুগতদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে। সেজন্য এই বামেরা এখনো আওয়ামী লীগের ন্যারেটিভ প্রচার করে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ঠিক করতে উদ্যানের গেট বন্ধ করে দিলে বামেরা এর বিপক্ষে কথা বলে। গতকালও তারা প্রক্টর স্যারের সঙ্গে চরম মাত্রার বেয়াদবি করেছে। আজকে তারা প্রকাশ্যে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়েছে। 

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে প্রতিটি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে লাল সন্ত্রাসের হাত ছিলো। ৯২ সালের ডাকসু বন্ধের পেছনেও এই লাল সন্ত্রাসীদের হাত ছিলো। আমরা এই রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে এ লাল সন্ত্রাসী মেঘমল্লার বসুকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।