নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের পরিবারের সদস্যরা রাজশাহী থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন।
সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল ৫টা ১৮ মিনিটে বিশেষ একটি ফ্লাইটে রাজশাহীর হযরত শাহ মখদুম বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন তারা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা ঢাকায় পৌঁছান।
তবে, রওনা হওয়ার আগে মা সালেহা খাতুন ও বাবা তোহরুল ইসলাম জানতেন না তাদের সন্তান তৌকির আর নেই। তারা জানতেন তৌকির জীবিত ও চিকিৎসাধীন আছেন।
বিশেষ ওই বিমানে মা-বাবার সঙ্গে আরও ছিলেন তৌকিরের স্ত্রী ঢাকার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আকশা আহম্মেদ নিঝুম, বোন সৃষ্টি খাতুন ও তার স্বামী ডা. তুহিন ইসলাম।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন তাদের গাড়িচালক আলী হাসান।
বাড়িতে বর্তমানে তৌকিরের চাচাতো মামা রফিকুল ইসলাম ও গাড়িচালক আলী হাসান রয়েছেন। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেল থেকে রাজশাহী নগরীর উপশহরের তিন নম্বর সেক্টরের ‘আশ্রয়’ নামের ভাড়া বাড়িতে স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বজনদের ভিড় করতে দেখা যায়।
বাড়ির মালিক আতিকুল ইসলাম বলেন, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামের মা-বাবা ও বোন জামাই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে তার মৃত্যুর খবর জানতেন না। পরিবারের সদস্যরা জানেন সাগর জীবিত ও চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তৌকির ইসলামের বড় চাচা মতিউর রহমান বলেন, ঢাকায় রওনা হওয়ার আগে তৌকিরের বাবা-মাকে নিহতের খবর জানানো হয়নি। গত বছর তৌকির ইসলাম বিয়ে করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। তার স্ত্রী ঢাকার ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক।
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুর ১টার পর রাজধানীর উত্তরায় দুর্ঘটনায় পড়ে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। বিমানটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে গিয়ে পড়ে এবং বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে বিমান ও স্কুল ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। যে ভবনে এটি বিধ্বস্ত হয় সেখানে বহু স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী ছিল। যাদের বেশিরভাগই হতাহত হয়।
দুর্ঘটনার পরপর উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। উত্তরাসহ আশপাশের নয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং হতাহতদের উদ্ধার করা শুরু করে। পরে উদ্ধার অভিযানে যোগ দেয় বিজিবি ও সেনাবাহিনী। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মর্মান্তিক এ ঘটনায় শোক জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।