কৃষি ২৫ জুন, ২০২৩ ০৭:১৬

যেভাবে চেনা যাবে কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু

আমাদের কাগজ ডেস্ক: কদিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। এই ঈদের মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থাকে কোরবানি। প্রতিবছর কোরবানি এলে দেশে গরুর চাহিদা অনেকাংশে বেড়ে যায়। বাড়তি চাহিদার কথা মাথায় রেখে বহু খামারি গরু মোটাতাজা করেন। 

পেশাদার সৎ খামারিরা সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে অর্থাৎ প্রাকৃতিক উপায়ে গরু হৃষ্টপুষ্ট করেন। কিন্তু একশ্রেণির অসাধু খামারি নিষিদ্ধ ওষুধ প্রয়োগ করে গরু মোটাতাজা করেন। তারা স্টেরয়েড গ্রুপের ওষুধ, যেমন- ডেকাসন, ওরাডেক্সন, প্রেডনিসোলন ইত্যাদি সেবন করিয়ে অথবা ডেকাসন, ওরাডেক্সন স্টেরয়েড ইনজেকশন দিয়ে গরুকে মোটাতাজা করেন। অনেকে আবার হরমোন প্রয়োগ (যেমন ট্রেনবোলন, প্রোজেস্টিন, টেস্টোস্টেরন) করেও গরুকে মোটাতাজা করে থাকেন। 

কৃত্রিমভাবে মোটা করা গরুর মাংস মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই এসব পশু কোরবানি না দেওয়াই ভালো। সমস্যা হলো বেশিরভাগ মানুষ সাধারণ চোখে বুঝতে পারেন না কোনটি প্রাকৃতিক আর কোনটি কৃত্রিমভাবে মোটাতাজা করা হয়েছে। এই প্রতিবেদনে জানুন কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু চেনার কিছু উপায়- 

আঙুলের চাপ 

কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরুর গা ‘পানি নামা’ রোগীর শরীরের মতো ফুলে থাকে। এই গরুর শরীরে আঙুল দিয়ে চাপ দিলে ওই স্থানের মাংস দেবে যায়। মাংস বেশ কিছুক্ষণ দেবে থাকে এবং আগের অবস্থায় ফিরে আসতে অনেক সময় লাগে। অন্যদিকে, প্রাকৃতিকভাবে মোটা করা পশুর গায়ে চাপ দিলে মাংস খুব বেশি দেবে যাবে না। যতটুকু দেবে যাবে, তা সঙ্গে সঙ্গেই আগের অবস্থায় চলে আসবে।

হাঁটা চলা

কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজাকৃত গরুর শরীর ভারী হয়ে যায়। শরীরে বেশি পানি জমার কারণে এরা সহজে হাঁটতে চায় না এবং এক জায়গায় বসে থাকে। গরু কিনতে গেলে বসে থাকা গরুকে উঠিয়ে হাঁটিয়ে দেখা উত্তম।

ঘন শ্বাসপ্রশ্বাস 

কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু খুব দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস গ্রহণ করে। একটু হাঁটলেই হাঁপিয়ে যায়। এসব গরুকে খুবই ক্লান্ত দেখায়।


রানের মাংস

ইনজেকশন দেওয়া গরুর রানের মাংস স্বাভাবিক গরুর রানের মাংসের চেয়ে অনেক নরম থাকে। সেদিকে নজর দিন। 

লালা বা ফেনা

যেসব গরুর মুখে কম লালা বা ফেনা থাকে, এমন গরু কেনার চেষ্টা করুন। এগুলো প্রাকৃতিক উপায়ে বড় করা গরু। কৃত্রিম উপায়ে মোটা করা পশুর লালা বা ফেনা বেশি হয়। 

হাড়ের অবস্থান

যেসব গরুর চেহারা স্বাভাবিক উষ্কখুষ্ক এবং চামড়ার ওপর দিয়ে হাড় বেরিয়ে থাকে, সেগুলো সুস্থ ও প্রাকৃতিকভাবে মোটা করা গরুর লক্ষণ। বেশি চকচক করা গরু বা ছাগল কিনবেন না। এদের মধ্যে ঝুঁকি বেশি। 

খাবারে অনাগ্রহ

সুস্থ ও স্বাভাবিক উপায়ে বেড়ে উঠা গরু খুব চঞ্চল হয়। এরা খাবার দেখলেই জিহ্বা দিয়ে টেনে খাওয়ার চেষ্টা করবে। গরুর সমস্যা থাকলে খাবারে অনাগ্রহ দেখায়।


নাকের ওপরের অংশ

সুস্থ স্বাভাবিক গরুর নাকের ওপরের অংশ ভেজা থাকবে। বিন্দু বিন্দু ঘাম জমা থাকতে পারে। অন্যদিকে অসুস্থ গরুর নাক থাকে শুকনা।

এছাড়া কৃত্রিম উপায়ে মোটা করা গরুর দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। ছোটখাটো এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন। এতে কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা গরু এড়ানো সম্ভব হবে। 

 

আমাদের কাগজ/টিআর