জাতীয় ১২ নভেম্বর, ২০২২ ০৬:০২

সরকারকে চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, কিন্তু কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ হয় সে লক্ষ্যে সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নির্বাচনকে ঘিরে দেশটির শীর্ষ পর্যায় থেকে একাধিকবার সরকারের প্রতি তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক তাতে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। ভবিষ্যতে কোন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে তা নিয়েও ভাবছে না যুক্তরাষ্ট্র। তারা চান সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হোক। অতীতের মতো বাংলাদেশে নির্বাচন চায় না বলেও সরকারকে বার্তা দিয়েছে দেশটি।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এরইমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বৈঠক শেষে তিনি খোলাখুলি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। এছাড়াও তিনি বহুবার সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির কেন্দ্রে রয়েছে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা। সে কারণে তারা বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষায় সচেষ্ট। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে আগ্রহী দেশটি।

গত সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করেছেন মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তার। সে সময় তিনি আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসও উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজনৈতিকদলগুলোকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির আহ্বান জানান। এছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র বলেও জানান তিনি।

আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে সরকারী ও বিরোধী দল। আওয়ামী লীগের পক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হবে না বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে, বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হলে নির্বাচনে অংশ নেবে না তারা। মার্কিন উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আক্তারের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। এ সময় উভয়পক্ষ এনিয়ে বাগ-বিতণ্ডাও করেছেন। এ সময় আফরিন আক্তার বলেছেন, বিশ্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পপুলার নয়। কেননা বিশ্বে শুধু মাত্র দুইটি দেশে এই ব্যবস্থা রয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দেওয়া হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সেটা ভালোভাবে নেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বার্তাকে পছন্দ করছে না সরকার। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চায় দুর্বলতা থাকতে পারে, আর সেটা যুক্তরাষ্ট্রেও রয়েছে।


আমাদেরকাগজ/এইচএম