নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্যার কারণে সিলেট ছাড়া সারাদেশে শুরু হয়েছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। তবে বৃষ্টির কারণে কেন্দ্রে আসতে বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে কক্ষে প্রবেশ করতে বলা হলেও বৃষ্টির কারণে অনেকে দেরি করে কেন্দ্রে পৌঁছায়।
রোববার (৩০ জুন) সকাল ১০টায় শুরু হয় বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা এবং বন্দরনগরী চট্টগ্রামে বৃষ্টিতে ভিজে, কেউবা পানি মাড়িয়ে কেন্দ্রে পৌঁছায়। চট্টগ্রামের চকবাজারসহ কয়েকটি এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়ে পরীক্ষার্থীরা। অনেকে ভেজা শরীরেই পরীক্ষা দিতে বাধ্য হয়।
রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রের বাইরেও দেখা যায় একই চিত্র। ঝুম বৃষ্টি থেকে রেহাই পেতে ছাতা মাথায় অনেকে কেন্দ্রে এলেও ভিজে যায় শিক্ষার্থীরা।
রাজধানীর আজিমপুর গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সামনে থেকে সময় সংবাদের প্রতিবেদক শাকির আহমেদ জানান, ওই কেন্দ্রে প্রবেশ করা প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থী ভিজে গেছে। প্রচণ্ড বৃষ্টি থাকায় ছাতায়ও রক্ষা হয়নি।
পরীক্ষার দিনের ভোগান্তির পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েও চিন্তায় আছেন বলে জানান অভিভাবকরা।
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার এলাকা থেকে প্রতিবেদক পার্থ প্রতিম বিশ্বাস জানান, ভোররাত থেকে টানা বৃষ্টিতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম নগরী। ফলে হাঁটু পানি মাড়িয়ে কেন্দ্রে যেতে দেখা গেছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের। জলাবদ্ধতার কারণে পরীক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের নিচু এলাকায় নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে বেগ পেতে হয়। অনেকে রাস্তায় গাড়িই পাননি। আবার যারা আগে থেকে গাড়ি ঠিক করে রেখেছিলেন তাদের গাড়িও জলাবদ্ধতার কারণে সঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেনি।
এবছর আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা বলছিল, পরীক্ষার জন্য তারা পর্যাপ্ত সময় পায়নি। তাছাড়া জুন মাস বর্ষা মৌসুমের মধ্যে পড়েছে। এই ভরা বর্ষার মধ্যে যাতে তাদের পরীক্ষা না নেয়া হয় সেজন্য অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় এবং বোর্ডের পক্ষ থেকে সেই দাবি আমলে নেয়া হয়নি। ফলে বৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেই তাদের আজকে পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হতে হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, যেহেতু বর্ষাকাল চলছে তাই দেশজুড়ে বৃষ্টির প্রবণতা সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়তে পারে।
আগামী বছরও যাতে একই ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে না হয় সেজন্য দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে পরীক্ষার সময়সূচি ঠিক করার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
অপরদিকে বন্যার কারণে এবার সিলেট শিক্ষা বোর্ড ও সিলেট বিভাগের কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ড ছাড়া বাকি ১০টি বোর্ডের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সিলেবাস সংক্ষিপ্ত হলেও তিন ঘণ্টায় ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হচ্ছে।
এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি/আলিম/এইচএসসি (বিএম/বিএমটি), এইচএসসি (ভোকেশনাল)/ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। এর মধ্যে ছাত্রসংখ্যা ৭ লাখ ৫০ হাজার ২৮১ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৫০৯ জন। এবার মোট কেন্দ্র ২ হাজার ৭২৫টি ও মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯ হাজার ৪৬৩টি।
আমাদের কাগজ/টিআর