সারাদেশ ৯ মে, ২০২৩ ১০:২৫

জামালপুরে ধর্ষণের শিকার তরুণীর সন্তান প্রসব, ধর্ষক পলাতক

নিজস্ব প্রতিবেদক : জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় ধর্ষণের শিকার হয়ে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক তরুণী (২০) কন্যাসন্তান প্রসব করেছেন। এ ঘটনার আগে গত শুক্রবার মেলান্দহ থানায় ধর্ষক মামুন মিয়াকে প্রধান আসামি করে চারজনের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা লাইলী বেগম। মামুন মিয়া মেলান্দহ উপজেলার ভালুকা গ্রামের ময়ফল মিয়ার ছেলে। রোববার জন্ম নেওয়া নবজাতক ও তার মা বর্তমানে জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

মঙ্গলবার, ৯ মে সকালে জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, নবজাতক কন্যাসন্তান ও তার মা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ওই তরুণীর আগের চেয়ে অবস্থার উন্নতি হয়েছে এবং তারা দুইজন এখন অনেকটাই সুস্থ। তবে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ওই তরুণী। 

ধর্ষণের শিকার তরুণীর মা বলেন, গত রোববার জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে তার মেয়ে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। এরপর তার মেয়ে অনেকটাই অসুস্থ হয়ে পড়ে কিন্তু বর্তমানে সে সুস্থ আছে। অভিযুক্ত মামুনের চেয়ে তারা অনেক গরিব। ধর্ষণের ঘটনা ঘটার পর থেকে তিনি ধর্ষকের পরিবারের কাছে বারবার গিয়েছেন বিচারের জন্য। উল্টো অভিযুক্ত মামুন তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। প্রসবের আগে বাচ্চাটি নষ্ট করার জন্য ভুক্তভোগীর পরিবারকে অনেক চাপও দিয়েছে মামুন।

বর্তমানে নবজাতককে দত্তক নেওয়ার জন্য অনেকেই চেষ্টা করছে কিন্তু তিনি যতদিন বেঁচে আছেন এই নবজাতক শিশুকে তিনি নিজেই লালন পালন করবেন। তবে তার মেয়ের সঙ্গে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা যে ঘটিয়েছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ডা. ফাখরিয়া ইসলাম জানান, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী প্রসূতি মা ও নবজাতক এখন আগের তুলনায় সুস্থ আছে। তারা দুজনেই প্রসূতি ওয়ার্ডে ২নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জানা যায়, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ওই তরুণীকে স্থানীয় মামুন নামে এক যুবক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। এ ঘটনায় গত শুক্রবার মেলান্দহ থানায় চারজনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার অভিযুক্ত চার ব্যক্তিই বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। প্রধান আসামি অভিযুক্ত মামুনের স্ত্রী ও সন্তানের নামও রয়েছে মামলায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে ওই তরুণী সবকিছু বুঝে উঠতে পারে না। অভিযুক্ত মামুন ওই তরুণীকে গত বছরের আগস্ট মাসে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর একপর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই তরুণী এবং পাঁচ মাস পর তার মা বিষয়টি বুঝতে পারেন। পরে স্থানীয়ভাবে সালিশ হয়; কিন্তু সেখানে যুবকের পরিবার বিষয়টি মেনে নেননি বরং টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। তবে তরুণীর পরিবার বিষয়টি মেনে নেয়নি।

মেলান্দহ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, মেলান্দহের ভালুকায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় চারজনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীর মা। আসামিদের গ্রেফতার করতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

আমাদেরকাগজ / এইচকে