সারাদেশ ৬ আগস্ট, ২০২৫ ১০:১১

জাল সনদে স্কুল সভাপতি : সেই মাদক মামলার আসামিকে অব্যাহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
জাল সনদ দিয়ে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে সভাপতি পদে নিয়োগ পাওয়া মোহাম্মদ আলীকে অব্যাহতি দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। 

বুধবার (৬ আগস্ট) বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর মো. আবুল কাসেমের সই করা এক আদেশে বিষয়টি জানানো হয়৷ 

এতে উল্লেখ করা হয়, বোয়ালখালীর উত্তর গোমদণ্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মোহাম্মদ আলীর সনদটি জাল প্রমাণিত হয়েছে৷ একারণে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এর আগে গত ২৪ মার্চ মোহাম্মদ আলীকে নিয়োগ সভাপতি হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। এক্ষেত্রে তিনি যেসব সনদ জমা দিয়েছেন, তার মধ্যে অনার্সের সনদটি জাল বলে অভিযোগ ওঠে। একই সঙ্গে তার মাদক মামলায় জেল খাটার বিষয়টিও জানাজানি হয়। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে ঢাকা পোস্টসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি তদন্তে গত ৪ আগস্ট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইলিয়াস উদ্দিন আহমেদ দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এতে সদস্য করা হয়েছে শিক্ষা বোর্ডের উপ সচিব মোহাম্মদ মোরশেদ আলম এবং উপ বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. শফিউল আজম শফিকে।

কমিটির সদস্যরা বুধবার সাউদার্ন ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে সনদটি তদন্ত করেন। সেখানের কতৃপক্ষ সনদটি জাল বলে শনাক্ত করেন। এরপর এ দিনই শিক্ষা বোর্ডে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে মোহাম্মদ আলীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইলিয়াস উদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বোর্ডে জমা থাকা নথি অনুযায়ী, মোহাম্মদ আলী মাদরাসা বোর্ড থেকে ১৯৯৭ সালে সেকেন্ড ডিভিশনের দাখিল ও ১৯৯৯ সালে থার্ড ডিভিশনের আলিম পাস করেন। এরপর তিনি প্রথম শ্রেণিতে ২০০৩ সালে চট্টগ্রামের সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স সম্পন্ন করেছেন বলে একটি সনদ জমা দেন। যেটিতে বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা ইসলামিক হিস্ট্রি অ্যান্ড কালচার। এ বিষয়ে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি কতৃপক্ষ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ নামে কোনো বিভাগ কখনোই ছিল না। ইসলামিক স্টাডিজ নামে একটি বিভাগ চালু হয়েছে ২০১০ সালে।

এদিকে, ২০২১ সালের ২৮ অক্টোবর বোয়ালখালীতে এক হাজার লিটার চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বোয়ালখালী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন কান্তি দে বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ অভিযোগপত্র জমা দিলে আসামিদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে আদালত৷ সেই পরোয়ানামূলে ২০২২ সালের ২২ জুলাই মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। বর্তমানে মাদক মামলাটি বিচারাধীন।

মোহাম্মদ আলী নিজেকে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে পরিচয় দেন। তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায়, সভাপতি নিয়োগ পাওয়ার পর গোমদণ্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে কয়েকবার গিয়েছেন তিনি। শিক্ষার্থীদের নিয়ে কর্মসূচিও পালন করেন তিনি।