সারাদেশ ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০৭:৫৬

জাবি অধ্যাপক ড. সুলতানা আক্তার

নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনার কারণেই সহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে

উপজেলা প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সুলতানা আক্তার বলেছেন, আমি যতটুকু জানি, জান্নাতুল ফেরদৌস তাড়াহুড়া করে সকালে নির্বাচনী কাজে এসেছিলেন। তিনি তিনতলায় ওঠার সময় দরজার সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান। এরপর হাসপাতালে নেওয়ার আগেই কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান। আমি মনে করি, যদি গতকাল ফলাফল ঘোষণা করা হতো, তাহলে এই মৃত্যু আমাদের দেখতে হতো না, আমাদের কাঁদতে হতো না।

ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের পরও কেন হলে (হলগুলোতেই) গণনা করা হলো না এটাই আমার প্রশ্ন। নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনার কারণেই আমার সহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ের নিচে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে অধ্যাপক ড. সুলতানা আক্তার বলেন, আমি আমার সহকর্মীর মৃত্যুতে মর্মাহত ও ব্যথিত। যেখানে তিনি মারা গেছেন, সেখানে আমিও থাকতে পারতাম। আমরা শিক্ষকরা ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে অমানুষিক পরিশ্রম করেছি। নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ২৮০ জন ভোটারের মধ্যে ১৩৭ জন ভোট দিয়েছেন সবকিছু সুশৃঙ্খলভাবেই হয়েছে। সাংবাদিকরা লাইভ করেছেন, পোলিং এজেন্ট ছিলেন, ভোটারদের কাছেও জিজ্ঞেস করে জানতে পারবেন আমরা কতটা চেষ্টা করেছি।

মতবিনিময় সভায় আমাদের শুধু বলা হয়েছিল, ভোট কাস্ট করে সিনেট ভবনে দিতে হবে। আমি তখনই প্রশ্ন করেছিলাম ভোট গণনা কোথায় হবে? উত্তরে বলা হয়েছিল, মেশিনের মাধ্যমে গণনা হবে, আমাদের কষ্ট কমবে। আমরা সেটাই বিশ্বাস করেছি।

অথচ ১০ তারিখ রাতে হঠাৎ করে নোটিশ আসে ভোট গণনা হবে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে। যদি শুরু থেকেই ম্যানুয়াল গণনার পরিকল্পনা থাকত, তাহলে প্রতিটি হলে গণনা করে রাত ১০টার মধ্যেই ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব ছিল। আমরা কমিশনে ফলাফল নিয়ে এলে রাত ১১টার মধ্যেই সব কিছু শেষ করা যেত।

রাতেই রেজাল্ট হলে, আজ হয়তো আমার সহকর্মীর মৃত্যু দেখতে হতো না। তিনিও হয়তো ঘুমাতে পারতেন, বিশ্রাম নিতে পারতেন। আমিও সারারাত স্টেজে ছিলাম, কখন ফোন আসবে সেই অপেক্ষায়।