আন্তর্জাতিক ৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:৫৪

শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী’ মনে করে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে যাওয়া শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনে করে ভারত। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেছেন।

গত মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবিলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ের পর আওয়ামী লীগ অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। এই বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের ‘‘প্রধানমন্ত্রী’’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এই প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের কাছে এক সাংবাদিক জানতে চান, শেখ হাসিনাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাকি ‘‘নির্বাসিত প্রধানমন্ত্রী’’ হিসেবে বিবেচনা করছে ভারত। এমন প্রশ্নের জবাবে ভারতের সরকারের অবস্থান তুলে ধরে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘আমরা এখান থেকে ইতিমধ্যে বলেছি যে, তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশের একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান এটাই।’’

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে সামরিক বিমানে করে ভারতে যান শেখ হাসিনা। তখন থেকেই দিল্লির একটি সেইফ হাউসে আছেন তিনি। তবে ঠিক কোন এলাকায় রয়েছেন শেখ হাসিনা, সেই বিষয়ে ভারতের সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য জানানো হয়নি।

এছাড়া ভারতের সরকার বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে কোন মর্যাদায় রেখেছে, সে বিষয়েও কিছু জানায়নি দিল্লি। যদিও গত ২৪ অক্টোবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা বর্তমানে নয়াদিল্লির লুটিয়েনস বাংলো জোনের একটি সেইফ হাউসে বসবাস করছেন। গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে ভারতের সরকার তার জন্য এই ব্যবস্থা করেছে।

দ্য প্রিন্ট বলছে, ভারত সরকারের মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ এমপি ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বাড়ির মতো লুটিয়েনসের বাংলোতে শেখ হাসিনাকে তার মর্যাদা অনুযায়ী একটি বাড়ি দেওয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য দ্য প্রিন্ট বাড়িটির সঠিক ঠিকানা অথবা রাস্তার বিবরণ প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় চরমপন্থীরা জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন জয়সওয়াল। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে হিন্দুদের ওপর হামলায় ঘটনায় আবারও নিন্দা জানায় ভারত। এই ধরনের হামলা কেবল সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করবে।

জয়সওয়াল বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হয়েছে। তাদের সম্পত্তি লুট করা হয়েছে, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করা হয়েছে। হিন্দু ধর্মীয় সংগঠনগুলোকে লক্ষ্য করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উস্কানিমূলক পোস্ট দেওয়ার পর এসব ঘটনা ঘটেছে।’’

তিনি বলেন, এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ভারত আহ্বান জানায়।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, ‘‘এটা বোঝা যায় যে, এই ধরনের পোস্ট এবং এমন অবৈধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পেছনে চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলো জড়িত। এতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা আরও বাড়বে। আমরা আবারও বাংলাদেশ সরকারকে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’’

সূত্র: এএনআই।