নিজস্ব প্রতিবেদক।।
মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার শুরু হলে বাংলাদেশ সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করে চট্টগ্রাম বিভাগের বেশ কিছু শরণার্থী শিবির খুলে লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু বছর দুই যেতে না যেতেই ক্যাম্পগুলো থেকে বেরিয়ে এসে অবৈধপন্থা বিদেশ পাড়ি দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে না তাঁরা। বিশ্লেষকরা মতে, এই অবস্থা চলতে থাকলে, নিকট ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ভাবে চাপে পড়বে বাংলাদেশ। বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশের শ্রমবাজার।
এবিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুর রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আগেও বলেছি এখনও বলছি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা যতদিন জিরো টলারেন্স নীতি পৌঁছাতে না পারবো ততো দিন এমন একাধিক সমস্যা থেকে যাবে।
বিদেশে পাড়ি দেওয়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, আসলে তাদের একার পক্ষে কখনো এত কাগজপত্র তৈরি করে বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব না। এমনকি অবৈধ ভাবে সাগর পথেও যাওয়া সম্ভব না। অবশ্যই বাংলাদেশিদের কোনো না কোনো চক্র এর সাথে জড়িত আছে। তাই তাদের সবার আগে আটক করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তাহলেই এই সমস্যার সমাধান হবে।
অভিবাসন নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে এমনিতেই বাংলাদেশের শ্রমবাজার মন্দা। তাঁর উপরে বর্তমানে অবৈধপন্থা অবলম্বন করে রোহিঙ্গাদের একটি অংশ বাংলাদেশের পাসপোট ব্যবহার করে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব, কাতার, ওমান পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছে। যার ফলে এই দেশগুলোতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মানুষের উপরে বিশেষ ভাবে নজর রাখা হচ্ছে । আর এই দেশগুলো থেকে বিগত কয়েক মাসে শুধুমাত্র সন্দেহের উপরে ভিত্তি করে দেশগুলো প্রবেশের আগে অনেক বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এই অবস্থা চলতে থাকলে, নিকট ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ভাবে চাপে পড়বে বাংলাদেশ। বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশের শ্রমবাজার।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রৌনক জাহানের সাথে এবিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, আমি স্বীকার করছি রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারে বর্তমানে আমাদের কিছুটা সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার ইতি মধ্যে এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমানে আমাদের একটি টিম এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। আশা করছি দ্রুত এই সমস্যাগুলোর সমাধান হবে।