আমাদের কাগজ রিপোর্ট: ২০১৬ সালের ঢাকায় হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারানো মেট্রোরেলের সাত জাপানি পরামর্শককে শ্রদ্ধা জানাতে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, ‘তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়ীতে বুধবার সকালে দেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬-এর উদ্বোধন করে এ কথা জানান তিনি। প্রকল্পটি দিয়াবাড়ী থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যাবে। তবে প্রথমভাগে চলবে দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। আগামী বছরের ডিসেম্বরে মতিঝিল পর্যন্ত এবং ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে চলবে পুরো পথে।
উদ্বোধন পর্বে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মরণ করেন হলি আর্টিজানে প্রাণ হারানো সাত জাপানি পরামর্শকদের। ওই বছরের ১ জুলাই রাতে গুলশানের এই রেস্টুরেন্টটিতে খেতে গিয়েছিলেন তারা।
মেট্রোরেলের সমীক্ষার পাশাপাশি ঢাকার যানজট ব্যবস্থাপনা নিয়েও গবেষণা করছিলেন এই প্রকৌশলীরা। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ যায় তানাকা হিরোশি, ওগাসাওয়ারা, শাকাই ইউকু, কুরুসাকি নুবুহিরি, ওকামুরা মাকাতো, শিমুধুইরা রুই ও হাশিমাতো হিদেইকোর।
এই ঘটনায় মেট্রোরেল প্রকল্পে অনিশ্চয়তা তৈরি হয় কি না, এই আলোচনার মধ্যে জাপান সরকার পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশের। তারা স্পষ্ট করেই বলে, সন্ত্রাসবাদীরা উৎসাহী হবে, এমন কোনো কাজ তারা করবে না।
৩ জুলাই জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শেইজি কিহারার নেতৃত্বে একটি দল ঢাকায় এসে দেখা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। এরপর দেশটির সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন শেখ হাসিনা।
নিহতদের আত্মার শান্তি কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি সমবেদনা জানাই সবার পরিবারকে।
‘আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই জাপানের তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী (শিনজো আবে), যিনিও ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শাহাদাৎ বরণ করেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। কারণ, এই কাজ তিনি বন্ধ করে দেননি। কিছু দিনের জন্য থেমে ছিল। কিন্তু তার নির্দেশে আবার মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।’
শ্রদ্ধার পাশাপাশি এই প্রকল্প জাপানিদের নাম চিরদিনের স্মরণ করতে উদ্যোগের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশনে, তাদের নামফলক আমরা রাখব। তাদের নামফলক উত্তরা দিয়াবাড়ির মেট্রোরেল প্রদর্শনী ও তথ্য কেন্দ্রে স্মৃতিস্মারক আমরা স্থাপন করেছি। তাদের নামটি যেন স্মরণ থাকে, আমরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এর আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও জাপানি পরামর্শকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। তিনি জানান, ফার্মগেটে সেই সাত জাপানির ভাস্কর্য নির্মাণ করবেন তারা।
প্রতিমন্ত্রী লেখেন, ‘প্রস্তাব করেছিলাম হোলি আর্টিজানের জাপানিজ ভিক্টিমদের নামে স্টেশনগুলোর নামকরণ করতে। সব পরিবারের সম্মতির প্রয়োজন ছিল। পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে ফার্মগেট স্টেশনে তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাস্কর্য নির্মাণের।’
আমাদের কাগজ/টিআর