লাইফ স্টাইল ৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০১:২৭

অকারণেই রেগে যাচ্ছে স্ত্রী, কিন্তু কেন?

ছবি - সংগৃহীত

ছবি - সংগৃহীত

আমাদের কাগজ ডেস্কঃ সুখে থাকার জন্য মানুষ বিয়ে করেন। একসাথে সারাজীবন একে অপরের সুখ -দুঃখকে খুব কাছ থেকে অনুভব করতে সমাজের স্বীকৃতি নিয়ে এক ছাদের তলায় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। কিন্তু কিছু বছর যেতে না যেতেই শুরু হয়ে যায় সম্পর্কে কোলাহল। তখন খুব ঠান্ডা মাথায় তুচ্ছ তুচ্ছ বিষয় গুলোকে হ্যান্ডেল করতে হয়। তা না হলে হয়ে যেতে পারে বিশাল অঘটন। এমনকি বিচ্ছেদও। তাই পরক করে যেনে নিন আপনার সঙ্গী ভালো লাগা -মন্দ লাগারকে। চলুন জেনে নেই অকারণেই  স্ত্রীর রেগে যাওয়ার কারণ: 

যতই ভালোবাসার সম্পর্ক হোক না কেন, পুরুষেরা প্রায়ই ভুলে যান সঙ্গিনীর মনের খবর রাখতে। এটা প্রথমেই বুঝতে হবে যে একজন পুরুষের চোখে যেসব ব্যাপার গুরুত্বপূর্ণ, নারীর চোখে সেটার একটা আলাদা মূল্য থাকতে পারে। আবার নারীর কাছে একদম গুরুত্বহীন ব্যাপারও পুরুষদের কাছে হতে পারে জরুরি। এই ব্যাপারটি আপেক্ষিক, মানুষ থেকে মানুষে বদলে যায়। আর তাই, যৌথ জীবনের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে পরস্পরের মন বুঝতে পারা। সাথের মানুষটি কী চাইছেন, সেটাকে মন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা। আসুন জেনে নেই স্ত্রী অকারণেই রেগে যাওয়ার কিছু কারণ।

পাশে থাকা হয়, কথা হয় না
সংসারে সবকিছু ঠিকঠাক মতন চলছে, কোথাও কোন সমস্যা নেই। দাম্পত্য জীবনও চলছে নিয়মমাফিক, চলছে শারীরিক ভালোবাসাও। ভাবছেন তাহলে সমস্যা কোথায়? সমস্যা আছে শুরুতেই! কেবলমাত্র সাংসারিক আলাপ বা যৌনতা দিয়ে ভালোবাসার সম্পর্ক টিকে থাকে না। ভালোবাসা টিকে থাকে দুজনের মাঝে মন বিনিময়ে। নিজের মনের কথাগুলো যেমন জীবনসঙ্গীকে খুলে বলা জরুরি, তেমনই তার মনের কথাগুলোও মন দিয়ে শোনা জরুরি। পাশাপাশি সংসার করতে গিয়ে অসংখ্য দম্পতি হারিয়ে ফেলে পরস্পরের সাথে কথা বলার সময়টুকু। কিন্তু এটা জরুরি, বিশেষ করে নারীদের জন্য। স্ত্রীর সাথে গল্প করুন প্রতিদিন, তার মন খারাপের কারণগুলো জানতে চান, তার ভালোবাসার কথাগুলো অনুভব করুন। অকারণ কলহগুলো মিলিয়ে যাবে এক সময়ে।

স্ত্রীর চাইতে সোশ্যাল মিডিয়া বেশি আকর্ষণীয়
আজকাল দাম্পত্য জীবনে অন্যতম বড় সমস্যার নাম হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া। এই সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে পরকীয়া ব্যাপারটি যে খুব সহজ হয়ে গেছে, সমস্যা কেবল সেখানে নয়। সবচাইতে বড় সমস্যা এই যে, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে আমাদের প্রচুর সময় অকারণেই নষ্ট হচ্ছে। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদির প্রতি আসক্তি এত ভয়াবহ যে নিজের আপনজনদের সময় দিতে ভুলে যাচ্ছি আমরা। ফলাফল? দূরত্ব, ভালোবাসার অভাব, অশান্তি। স্ত্রীর চাইতে সময় কাটানোর বদলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্রাউজিং বা চ্যাট করে সময় কাটে বেশি? তাহলে জেনে রাখুন, আপনার স্ত্রীর মন খারাপ হবার এটি অন্যতম কারণ।

ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস আসক্তি
কেবল সোশ্যাল মিডিয়া নয়, আজকালকার অন্যতম ভয়ানক আসক্তি হচ্ছে সেলফোন। এই সেলফোন আসক্তি এখন এতটাই মারাত্মক যে কোথাও বেড়াতে গেলেও উপভোগ করার বদলে সেলফোন টেপা হয় বেশি। স্ত্রীকে নিয়ে হয়তো বাইরে খেতে গিয়েছেন, এমন সময়েও মোবাইলে গেম খেলেন বা অন্য কিছু করেন প্রায় সব পুরুষ। বুঝতেই পারেন না যে ব্যাপারটি কতটা অসম্মানজনক। একজন মানুষকে সামনে বসিয়ে রেখে সেলফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়াটা বড় মাপের অভদ্রতাও বটে। বিশেষ করে নারীরা এই কাজে খুবই অপমানিত বোধ করেন।

কখনো অন্য মানুষ!
স্ত্রীর সামনে অন্য নারীর দিকে বিশেষভাবে তাকানো, অন্য নারীর রূপের প্রশংসা করা কিংবা স্ত্রীকে বাদ দিয়ে অন্য নারীর পক্ষ নিয়ে দাঁড়ানো- এই কাজগুলো কমবেশি সকল স্ত্রী-ই অপছন্দ করেন। পরিবারকে সময় দেওয়ার বদলে বন্ধু বান্ধবের সাথে বেশি সময় কাটানো, অতিরিক্ত আড্ডাবাজিও আছে এই অপছন্দের তালিকায়। কেবল অপছন্দ নয়, অনেক নারীই সঙ্গীর এমন আচরণে অবহেলিত বোধ করেন, এটাও মনে করেন যে সঙ্গী হয়তো তাঁকে আর ভালোবাসেন না! অন্যদিকে পুরুষেরা এই কাজগুলো না বুঝেই করে ফেলেন, বুঝতেও পারেন না যে সঙ্গিনী ব্যাপারটি পছন্দ করছেন না।

তিনি আর নিজেকে ভালোবাসার পাত্রী মনে করেন না
সম্পর্কে শুরুর দিকে পরস্পরের সাথে সময় কাটানোর একটা তীব্র আকুলতা কাজ করে। হুটহাট ঘুরতে যাওয়া, সারপ্রাইজ দেওয়া, নানা রকমের উপহার বিনিময় ইত্যাদি চলতেই থাকে। সময়ের সাথে সাথে কমে আসে সবই, ব্যস্ত জীবনের বাস্তবতায় হারিয়ে যাক অনেক কিছুই। সঙ্গীর কাছ থেকে সময়ের অভাব, মনোযোগের অভাব ইত্যাদি সব মিলিয়ে অনেক স্ত্রীই বিষণ্ণতায় ভুগতে শুরু করেন। তারা মনে মনে ভাবতে শুরু করেন যে ভালোবাসা আর আগের মতন নেই। সেই বিষণ্ণতা থেকেই অহেতুক ঝগড়াগুলোর শুরু হয়।

হারিয়ে যাওয়া রোমান্স
শেষ কবে স্ত্রীর প্রশংসা করেছিলেন বলুন তো? আপনার জন্য তিনি কত কিছুই তো করছেন সারাদিন, শেষ কবে সেটার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন? শেষ কবে সঙ্গিনীকে বলেছিলেন- ‘তুমি সুন্দর?’ শেষ কবে বাড়ি ফেরার পথে এনেছিলেন এক গুচ্ছ ফুল? … হ্যাঁ, এসব ছোট্ট ছোট্ট কাজ হয়ত পুরুষের চোখে মনে হতে পারে অর্থহীন। কিন্তু নারীরা এসবের মাধ্যমেই খুশি হয়ে ওঠেন। নারীর চোখে এসব ছোট ব্যাপারই ধরা দেয় রোমান্টিকতা হিসেবে।

তাই স্ত্রীকে বেশি বেশি বোঝার চেষ্টা করুন। মনে রাখবের বাবার ঘর ছাড়ে আসার পর আপনি একমাত্র বেক্তি যার সাথে সে বিনা স্বার্থে সারাজীবন কাটিয়ে দেবে,কোন রকম অভিযোগ ছাড়াই। সূত্র, সময় টিভি 

আমাদের কাগজ/এম টি