আমাদের কাগজ ডেস্কঃ গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে স্বস্তির ঢেঁকুর তুলছিলেন ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল), ওআর নিজাম রোড শাখার প্রায়োরিটি ম্যানেজার মো. ইফতেখারুল কবির। অর্থ আত্মসাতের পরিমাণ ছিল ৫০ লাখ। কিন্তু শেষমেশ পরিত্রাণ পায়নি তিনি, দুদকের মামলায় এ ব্যাংক কর্মকর্তার ২৬ বছর কারাদণ্ড একই সাথে এক কোটি ৪ লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। মামলার অপর আসামি চট্টগ্রামের নিশাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহমুদুল হাসানকে ১৩ বছরেরর সশ্রম কারাদণ্ড, ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছর ৪ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় দুই আসামি কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, মো. ইফতেখারুল কবির ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ও আর নিজাম রোড শাখায় প্রায়োরিটি ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে গ্রাহকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেন। এই সুসম্পর্কে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। তেমনই এক ভুক্তভোগী গ্রাহক রুপন কিশোর বড়ুয়া।
২০১৯ সালের মার্চে রুপন কিশোর বড়ুয়াকে ইস্টার্ন ব্যাংকে ৫০ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত খোলার কথা বলে কৌশলে টাকাগুলো আত্মসাৎ করেন ইফতেখারুল। তাকে এই কাজে সহযোগিতা করেন ব্যবসায়ী মাহমুদুল হাসান।
এতে বিষয়টি বুঝতে পেরে ভুক্তভোগী গ্রাহক দুদকে অভিযোগ দিলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৯ সালে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে একই বছর বিষয়টি তদন্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম প্রতিবেদন জমা দেন।তদন্ত শেষে গত ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দাকিল করেন।
পরবর্তীতে গত বছরের ২১ জানুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তার দাখিলকৃত চার্জশিট গ্রহণ করে দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।
দুদক পিপি মাহমুদুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দুই আসামিকে যথাক্রমে ২৬ বছর ও ১৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় বিচারক ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন। তিনি বলেন, দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১,৪৭৭(ক), ১০৯ ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় দুই আসামিকে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতসূত্র জানায়, কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইফতেখারুল কবির ২০১৪ সালের ৩ জুলাই ইস্টার্ন ব্যাংক এ যোগদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারী ও আর নিজাম রোড শাখায় কাজ শুরু করেন। তখন থেকে তিনি বিভিন্ন গ্রাহকের সাথে অসৎ উদ্দেশ্য পূরণের জন্য সুসম্পর্ক সৃষ্টি করেন।
আমাদের কাগজ/এমটি



















