সারাদেশ ১৬ অক্টোবর, ২০২২ ১১:৫২

 মহেশপুরে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ

ঝিনাইদহের মহেশপুরে এক যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ভোলাডাঙ্গা গ্রামে শুক্রবার বিকেলে এভাবে নির্যাতন করা হয় বকুল হোসেন নামের ওই যুবককে। প্রবাসে থাকা কালীন সময়ে পাঠানো টাকা ফেরত চাওয়ায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন এ নির্যাতন চালায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নির্যাতনের পর আবার ওই যুবকের বিরুদ্ধেই আট বছর বয়সী শ্যালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা করে তারা।

নির্যাতনের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, গাছের সঙ্গে দুই পা বাঁধা অবস্থায় ওই যুবককে কেউ লাঠি দিয়ে দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। কেউ আবার শরীরের ওপর পা দিয়ে পাড়াচ্ছেন। যুবকের চিৎকারেও থামছে না তাদের নির্যাতন।

স্থানীয় লোকজন জানায়, প্রায় আট বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের পর ভোলাডাঙ্গা গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে বকুল হোসেনের সঙ্গে একই গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে লতিফার বিয়ে হয়। বিয়ের পর সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা আনতে বকুল মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান।  এরপর থেকে প্রতিমাসে স্ত্রীর কাছে টাকা পাঠানো শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ কয়েক বছর বিদেশে থাকার পর বছরখানেক আগে তিনি দেশে ফিরেছেন। বাড়িতে এসে জানতে পারেন, তার বিবাহিত স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে করে সংসার করছেন। এমন অবস্থায় পাঠানো টাকা শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে ফেরত চাইলে তারা দিতে অসম্মতি জানান। নিয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশ হলেও কোনো সমাধান হয়নি।

ভুক্তভুগি বকুলের ভাবি মুন্নী বলেন, বিদেশে থাকা অবস্থায় বকুল তার স্ত্রী লতিফার কাছে টাকা পাঠাতো। দেশে ফিরে সে দেখে তার স্ত্রী অন্য কারও সঙ্গে বিয়ে করে সংসার করছে। অবস্থায় বকুল পাগলের মতো হয়ে গেছে। সব সময়ই টাকা আর স্ত্রীকে ফেরত চাইতো। শুক্রবার বিকেলে শ্বশুরবাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তার শ্বশুরসহ ওই বাড়ির লোকজন বকুলকে অমানবিক নির্যাতন করে।

বকুলের স্ত্রী লতিফা বেগম বলেন, বকুল বিদেশ থাকাকালীন সময়ে তার মা-বাবা আমাকে নির্যাতন করতো। সেটা সহ্য করতে না পেরে আমি বাবার বাড়ি চলে আসি এবং অন্যত্র বিয়ে করে সংসার করি।

এখন বকুল দেশে ফিরে বলছে, সে আমার কাছে টাকা পাঠিয়েছে। আমাদের বাড়িতে এসে টাকা চাইলে নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়। কিন্তু সেখানে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানোর কোনো প্রমাণ সে দেখাতে পারেনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, একদিন পুলিশ বিষয়ে আমাদের বাড়িতে তদন্তে আসলে বকুল পিটিয়ে এক পুলিশের হাত ভেঙে দেয়। এরপর আমার আট বছর বয়সী ছোট বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল বকুল। তখন তাকে ধরে মারা হয়েছে।

তবে বিষয়ে মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মিয়া বলেন, আমাদের কোনো সদস্যকে নির্যাতন করা হয়নি। যদি নির্যাতন করা হতো তাহলে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে সেটা নিয়ে আমরা কঠোর আইনি ব্যবস্থায় যেতাম। তবে ঘটনায় বকুলের পরিবারের পক্ষ থেকে নির্যাতনের মামলা তার শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে। এখন তদন্ত করে সঠিক বিষয় বের করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আমাদের কাগজ/ ইদি