আমাদের কাগজ ডেস্কঃ মাদারীপুরের শিবচরে দুর্ঘটনাকবলিত ইমাদ পরিবহনের দূর্ঘটনাটি অনেকের জন্য কলঙ্ক বয়ে নিয়ে এসেছে। কেউ সন্তান হারা কেউবা ভাই হারা হয়েছেন এতে। আশফাক উজ্জামান লিঙ্কন (৪০) ও ইসরাক হোসেন (৩৪) দুই ভাই। তারা দুজনই রবিবার (১৯ মার্চ) সকালে মাদারীপুরের শিবচরে দুর্ঘটনাকবলিত ইমাদ পরিবহনের বাসটিতে ছিলেন।
ছোট ভাই ইসরাক দুর্ঘটনার আগে নেমে গিয়ে রক্ষা পান। আর বড় ভাই লিঙ্কন বাসদুর্ঘটনায় মারা গেছেন।
দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে লিঙ্কন সবার বড়। তাদের বাড়ি খুলনা শহরের টুটপাড়া এলাকায় ।
গতকাল রবিবার যখন ছোট ভাই তার বড় ভাইয়ের লাশ নিয়ে যখন বাড়ি এলেন তখন স্বজনদের কান্নায় ভারি হয়েছে আশপাশ। সৃষ্টি হয়েছে করুণ এক দৃশ্যের। হাউমাউ করে কাঁদছেন স্বজনরা । মা-বাবা মুর্ছা যাচ্ছেন।
জানা গেছে, খুলনা থেকে রবিবার ভোরে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ে ইমাদ পরিবহন। এর মধ্যে ছোট ভাই ইসরাক ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নিজ কর্মস্থলের জন্য নেমে গেলেও বড় ভাই লিঙ্কন ঢাকা যেতে থেকেছেন বাসেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর ঢাকায় পৌঁছানো হলো না তার।
মাদারীপুরের শিবচরে যাত্রীবাহী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ১৯ জনের প্রাণ গেছে। মৃত্যুর এই মিছিলে যোগ দিয়েছেন লিঙ্কনও।
আরও জানা যায়, ছোট ভাই ও বোনের বিয়ে হলেও লিঙ্কন এখনও বিয়ে করেননি। তিনি ঢাকায় থাকতেন।
করোনার শেষ দিকে খুলনায় আসেন এবং পজিটিভ শনাক্ত হলে হাসপাতালে এক মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন। তারপর থেকে তিনি খুলনাতেই আছেন। রবিবার সকালে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েও আর পৌঁছানো হয়নি তার।
ছেলে হারা বাবা শাহজাহান মোল্লা বলেন, ওরা দুই ভাই ভোর ৪টায় বাসা থেকে বের হয়ে যায়। ছোট ছেলে ইশরাক রাজবাড়িতে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ম্যানেজার। আর বড় ছেলে লিঙ্কন ঠিকাদারি করে। এখন ছোট ছেলেই বড় ছেলের লাশ নিয়ে বাড়িতে আসছে।
ইসরাক হোসেন বলেন, আমরা দুপুর ১২টার দিকে তার মৃত্যু নিশ্চিত হলেও বাবাকে জানাই দুপুর দেড়টার দিকে। মা অসুস্থ। তাই তাকে ঘটনা জানাইনি। কিন্তু লোকজনে বাড়ি ভরে যাওয়ার পর মায়ের বুঝতে বাকি নেই। তিনি বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন। ভাইয়ের শোকে আমরা এই বুঝি পথে এসে বসলাম।
আমাদের কাগজ/এমটি